কলকাতা: কাশীপুরে বিজেপি নেতার দেহ উদ্ধারের পরে তোলপাড় বাংলার রাজনীতি। বৃহস্পতিবারই রাজ্যে সফরে এসেছিলেন অমিত শাহ। কাশীপুরের ঘটনার পর সফর বদল করে কাশীপুর পৌঁছলেন অমিত শাহ। দুপুর ২টা বেজে ৫০ মিনিটে কাশীপুরে পৌঁছন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মৃত নেতার পরিবারের সঙ্গেও কথা হয়েছে বলে জানান অমিত শাহ। যেখানে দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল সেইখানে যান অমিত শাহ।


শাস্তি দিতে লড়াই:
তিনি বলেন, 'রাজনৈতিক হিংসা হচ্ছে। বিরোধীদের নিশানা করা হচ্ছে। ভারতীয় জনবতা পার্টি অর্জুন চৌরাসিয়ার হত্যার তীব্র নিন্দা করছে। অপরাধীদের কড়া শাস্তির জন্য আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব। অপরাধীরা যাতে শাস্তি পায় তা আমরা নিশ্চিত করেছি।' তিনি আরও বলেন, 'বাংলার জনতাকে বলছি এই হিংসার বিরুদ্ধে বিজেপি লড়ছে।' পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।


তীব্র নিন্দা:
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'অর্জুন চৌরাসিয়ার ঠাকুমাকেও ছাড়া হয়নি। মারধর করা হয়েছে। পরিবার জানাচ্ছে,তাঁদের থেকে জোর করে দেহ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।' গোটা বাংলার যেখানেই যান, রাজনৈতিক প্রতিশোধে হত্যা চলছে। বাংলায় রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে প্রবল নিন্দা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।  তিনি বলেন, 'বিরোধী নেতাদের বেছে বেছে খুন করা হচ্ছে। বিজেপি এই রাজনৈতিক হত্যার তীব্র নিন্দা করছে।' তাঁর কটাক্ষ, 'কালই তৃণমূলের এই সরকারের একবছর হয়েছে। তারপরের দিনই বাংলায় রাজনীতি হিংসা হল।'  তিনি আরও বলেন, 'এক বছরের কম সময়ে দেশের কোথাও এত সংখ্যক কেস সিবিআই-কে দেওয়া হয়নি যতটা বাংলার সরকারের কাছ থেকে নিয়ে হাইকোর্ট সিবিআইকে দিয়েছে।' তাঁর মতে, "এটাই বুঝিয়ে দেয়, আদালতের এখানকার আইনি পরিস্থিতি ও পুলিশের ওপর ভরসা নেই।" 


সকাল থেকে ধুন্ধুমার:
কাশীপুরে বিজেপি যুব মোর্চার এক নেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে তুলকালাম। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ২৬ বছরের ওই যুবক, অর্জুন চৌরাসিয়াকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাশীপুর রেল কোয়ার্টারের পরিত্যক্ত একটি ঘরে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ মেলে। ঘটনাস্থলে চলে আসেন বিজেপি নেতা, কর্মী, সমর্থকরা। পুলিশকে দেহ বের করতে বাধা দেওয়া হয়। দফায় দফায় বিক্ষোভ হয় পুলিশকে ঘিরে। এরমধ্যেই ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অতীন ঘোষ। তৃণমূল ও বিজেপি, দু’দলের কর্মীদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় স্লোগান যুদ্ধ।  পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে। তারা দেহ উদ্ধার করতে গেলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। অবশেষে বিজেপি কর্মীদের টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে পুলিশ মৃতদেহ বের করে। প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।  ঘটনায় মৃতের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে।


আরও পড়ুন: "আমাদের পবিত্র ভূমি থেকে বিভাজনের রাজনীতি সরিয়ে নিন", অমিতকে কটাক্ষ কাকলির