কানাডা: কোভিড প্রতিরোধে কাজে আসতে পারে ভিটামিন 'ডি'। পর্যবেক্ষণমূলক পরীক্ষায় এতদিন এই পরামর্শ দিচ্ছিলেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও নতুন গবেষণা বলছে, কোভিডের সঙ্গে ভিটামিন ডি-র এই পর্যবেক্ষণ অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিমূলক।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাসে ভিটামিন ডি-র প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় পিএলওএস মেডিসিনে। কানাডার কিউবেক-এর ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটিতে এই নিয়ে গবেষণা করেন গাইলিউম বাটলার ল্যাপোর্তে ও তোমোকো নাকানিসি। দুজনেই জানান, কোভিড প্রতিরোধে কোনও জেনেটিক প্রমাণ দিতে পারেনি ভিটামিন-ডি। জনস্বার্থে এই ভিটামিন নিয়ে কম পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়নি। কোভিডে ভিটামিন ডি-এর ব্যবহার এখন সবার কৌতূহলের বিষয়। যদিও গবেষণা বলছে, কোভিড প্রতিরোধে ভিটামিন ডি-এর কার্যকরিতার নগণ্য প্রমাণ হাতে এসেছে তাদের।
এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে Mendelian randomization study শুরু করেন গবেষকরা। যেখানে কোভিডের জেনেটিভ ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে ভিটামিন-ডির মাত্রা বাড়িয়ে চলে পর্যবেক্ষণ। ৪১৩৪ জন কোভিড ভ্যারিয়েন্ট যুক্ত রোগীর ওপর চলে এই পরীক্ষা। পাশাপাশি গবেষণায় রাখা হয়, ১১ দেশের কোভিডমুক্ত ১,২৮,৪৮৭৬ জন নাগরিককে। মূলত, গবেষণায় দেখা হয়, ভিটামিন ডি বেশি থাকার কারণে কারও কোভিড প্রতিরোধে সুবিধা হচ্ছে কি না ?
ফাইনাল সিদ্ধান্তের সময় গবেষকরা জানান, বাইরের থেকে ভিটামিন ডি দিয়ে কোভিড প্রতিরোধে খুব একটা সুবিধা হচ্ছে না সাধারণ মানুষের। যদিও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গবেষণার কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পর্যবেক্ষণের সময় শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব রয়েছে এমন ব্যক্তিদের রাখা হয়নি গবেষণায়। গবেষকদের ধারণা, বাইরের থেকে ভিটামিন ডি নেওয়ার ফলে এইসব কোভিড রোগীর অবস্থার পরিবর্তন হতেও পারত।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই গবেষণায় ইউরোপীয় কোভিড ভ্যারিয়েন্টদেরই শামিল করা হয়। ভবিষ্যতে অন্য দেশের ভ্যারিয়েন্টদের নিয়েও এই বিষয়ে গবেষণা চালানো দরকার। আপাতত কোভিড প্রতিরোধে ভিটামিন ডি নেওয়ার পক্ষপাতী নন তাঁরা। পরিবর্তে অন্য থেরাপিউটিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়াকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন গবেষকরা।
এ প্রসঙ্গে গবেষক বাটলার ল্যাপোর্তে জানান, বেশিরভাগ ভিটামিন ডি গবেষণার ব্যাখ্যা দেওয়া খুবই কঠিন কাজ। কারণ কোভিডের গুরুতর কেসে অনেক সময় ভিটামিন ডি কম থাকাটাই স্বাভাবিক হতে পারে। বয়স্ক ব্যক্তি বা প্রবীণ নাগরিক ছাড়াও যাদের কঠিন অসুখ রয়েছে সেই ক্ষেত্রেও ভিটামিন ডি-র পরিমাণ তাদের শরীরে কম থাকে। এই ক্ষেত্রে তারা কোভিড আক্রান্ত হলে জীবনের ঝুঁকি থেকেই যায়।