নয়াদিল্লি: ভারতের পশ্চিম উপকূলে উদ্বেগ। আরব সাগরে ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। ইতিমধ্য়েই অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বা 'extremely severe cyclonic storm'- এ পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। আগেই এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দফতর। এখন পূর্ব-মধ্য আরব সাগরের উপর থাকা ওই ঘূর্ণিঝড় ১৫ জুন আছড়ে পড়বে স্থলভাগে। ওইদিন গুজরাতের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ পেরোবে ঘূর্ণিঝড়, লাগোয়া পাকিস্তান উপকূলেও প্রভাব ফেলবে ওই অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।
কিন্তু এই ঘূর্ণিঝড়ের এমন নাম কেন? বিপর্যয় -নামটি বাংলাদেশের দেওয়া। নামটির অর্থ বিপদ।
কেন নামকরণ:
World Meteorological Organisation-এর তথ্যসূত্র অনুযায়ী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়গুলি সপ্তাহখানেক বা তারও বেশি সময় ধরে থাকতে পারে। ফলে একসঙ্গে একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হতে পারে বিভিন্ন এলাকায়। ফলে ঘূর্ণিঝড়গুলির পূর্বাভাস দেওয়ার সময় কোনওরকম সংশয় এড়াতে প্রতিটির আলাদা আলাদা নাম দেওয়া হয়। তাহলে নির্দিষ্টি এলাকায় বার্তা পৌঁছতে, সমুদ্রের নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকা জাহাজে সহজেই বার্তা পাঠানো যায়।
কীভাবে নামকরণ:
ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশ, আরব সাগরের একটি বড় অংশে, বঙ্গোপসাগরে কোনও ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি শুরু হলে তার দিকে কড়া নজর রাখে ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (India Meteorological Department)। এই ঘূর্ণিঝড়গুলির নামকরণ করা হয়। আবহাওয়া দফতরগুলির একটি মঞ্চ থেকে নাম ঠিক করা হয়। সেই মঞ্চে রয়েছে- ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, পাকিস্তান, মলদ্বীপ, ওমান, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইয়েমেন। ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বা ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়গুলির নাম ঠিক করার জন্য ২০০০ সালে ওমানের মাস্কটে World Meteorological Organisation-এর অধিবেশনে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ-সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখনই সবকটি দেশ মিলে একটি তালিকা দিয়েছিল। সেখান থেকেই পাওয়া যায় ঝড়ের নাম। আয়লা, আমপান, বুলবুল, হুদহুদ, ফণী, অশনি, সিত্রাং, মোকা---এই সবকটি নামই এমন ভাবে এসেছে। কোন বছরে কত নম্বর ঘূর্ণিঝড়ের কী নাম হবে তা ইতিমধ্যেই তৈরি।
ক্রমশ শক্তিসঞ্চয় করে এখন 'extremely severe cyclonic storm'- এ পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। তার জেরে বিমান চলাচলে ধাক্কা লেগেছে। উপকূল মহারাষ্ট্রের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। IMD জানিয়েছে, বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে, তারসঙ্গেই ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে হাওয়া বইবে। রত্নগিরি, রায়গড়, থানে, পালঘর এবং কোলাপুরে এই সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। বৃহস্পতিবার গুজরাত ও পাকিস্তান উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। কচ্ছ, জামনগর, মোরবি, গির সোমনাথ, পোরবন্দর এবং দ্বারকা জেলায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। গুজরাত, কেরল, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র এবং লাক্ষাদ্বীপে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
আরও পড়ুন: 'ভেবেছি যত পারি গাছ রেখে যাব...', পরিবেশ বাঁচাতে গাছ পোঁতাই নেশা শ্যামলের