ইসলামাবাদ: বোমা বিস্ফোরণে (Explosion) নিহতের সংখ্যা বাড়ছে পাকিস্তানে (Pakistan Blast))। সন্ধে পর্যন্ত যা খবর, তাতে অন্তত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। রবিবার জমিয়ত-উলেমা-এ-ইসলাম-ফজল (JUI-F) নামে এক সংগঠনের কর্মীদের সমাবেশে তীব্র বিস্ফোরণ হয়। প্রাথমিক ভাবে অন্তত ৫০ জনের জখম হওয়ার খবর মেলে। তবে পরে তদারকি তথ্যমন্ত্রী ফিরোজ জামাল শাহ কাকাখল জানান, নিদেনপক্ষে ২০০ জন আহত হয়েছেন। খাইবার পাখতুনখোয়া (Khyber Pakhtunkhwa) প্রদেশের বজাউর জেলার সদর শহর, খার-এর বিস্ফোরণটি ঘটে। স্থানীয় এক JUI-F নেতা তাতে মারা যান বলে জানায় প্রশাসন। উদ্ধারকর্মীদের আশঙ্কা, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। 


কী জানা গেল?
যে JUI-F নেতার মৃত্যু হয়েছে, তাঁর নাম আমির জিয়াউল্লাহ জান। জখমদের তিমরগারা এবং পেশোয়ারে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। এই তালিকায় এক প্রথম সারির পাক খবরের চ্যানেলের ক্যামেরাপার্সনও রয়েছেন বলে জানা যায়। সমাবেশের মধ্যেই বিস্ফোরণটি ঘটে। নিরাপত্তারক্ষীরা তড়িঘড়ি এলাকাটি ঘিরে ফেলেন। এই কাজে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীও প্রশাসনকে সাহায্য করছে বলে জানা গিয়েছে। তবে আপাতত জখমদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করাই প্রধান লক্ষ্য, দাবি প্রশাসনের। তদারকি তথ্যমন্ত্রী পরে আরও জানান, বজাউর-সহ আশপাশের এলাকায় হাসপাতালগুলিকে 'হাই অ্যালার্ট'-এ থাকতে বলা হয়েছে।  তাঁর কথায়, 'জখমদের মধ্যে যাঁদের অবস্থা সঙ্কটজনক, তাঁদের হেলিকপ্টার করে পেশোয়ার ও  অন্যান্য হাসপাতালে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।'  বজাউর ডিস্ট্রিক্ট হেডকোয়াটর্স হসপিটালেই দেড়শোর বেশি জখমকে নিয়ে আসা হয়। পরে সঙ্কটজনক রোগীদের সেখান থেকে পেশোয়ারের লেডি রিডিং হাসপাতালে পাঠানো হয়।


কী ঘটেছিল?
প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকের মতে, আজকের সমাবেশে অন্তত ৫০০ জন মানুষের ভিড় হয়েছিল। একেবারে আশামতোই চলছিল সব কিছু। হঠাৎ বিস্ফোরণের কান ফাটানো আওয়াজ। শুনে সংজ্ঞা হারান কেউ কেউ। এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, সংজ্ঞা ফিরতে চার দিকে স্রেফ রক্তস্রোত দেখেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়। শুনেছিলেন বন্দুকের শব্দও। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের তদারকি মুখ্যমন্ত্রী আজম খান পরে পুলিশের কাছ থেকে রবিবারের বিস্ফোরণের একটি বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এদিনের বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা করেছেন। পাক প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, 'সন্ত্রাসবাদীরা পাকিস্তানের শত্রু। তাদের নিকেশ করা হবে।' বস্তুত, এদিনের বিস্ফোরণের তীব্র সমালোচনা করেছে পাকিস্তানের একাধিক দলই। কিন্তু ঘটনা হল, আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া এই চত্বরে সন্ত্রাসবাদের রমরমা নতুন নয়। তবে গত কয়েক মাসে পাকিস্তানের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়ঙ্কর অবনমনের সুযোগে আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সন্ত্রাসবাদ। তার জেরে স্রেফ এই বছরেই বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও আন্তর্জাতিক মহলের বড় অংশের মত, নিজের মাটিতে ইসলামাবাদ দিনের পর দিন যে ভাবে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মে মদত জুগিয়েছে, তা ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে আসার আশঙ্কা ছিলই। বাস্তবে হচ্ছেও তা যার জেরে প্রাণ হারাচ্ছেন বড় সংখ্যক সাধারণ মানুষ। 


আরও পড়ুন:বর্ষায় আবারও ডেঙ্গির প্রকোপ, এক শয্যায় দুই রোগী, ভিড় বাড়ছে জেলার হাসপাতালগুলিতেও