কলকাতা: 'রাজ্যপাল (governor) রাজ্যপালের মতো আছে, আমরা আমাদের মতো আছি। আমি তো কোনও ব্যতিক্রমী আচরণ (exceptional behaviour) দেখছি না। আমাদের বিধানসভা (west bengal assembly) পরিচালনা আমরা করি, রাজ্যপালের সঙ্গে যতটা যোগাযোগ রাখার দরকার আমরা রাখি। এখনও পর্যন্ত আমি সেরকম কিছু দেখিনি'। মন্তব্য বিধানসভার স্পিকার (Speaker biman banerjee) বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
প্রেক্ষাপট...
বিধানসভার অধ্যক্ষ এদিন এই কথা বললেও গত কাল তাঁকে বেনজির ভাষায় আক্রমণ করেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। বলেছিলেন, 'রাজ্যপাল ভেবেছিলেন আস্তে আস্তে সিঁধ কাটবেন, ধরা পড়বেন ভাবতে পারেননি। বাংলার রাজনীতিতে লড়তে গেলে, বাংলাকে চিনতে হবে। কেউই আমাদের রাজ্যপাল নন, সবাই বিজেপির রাজ্যপাল।' আইন-শৃঙ্খলার অবনতিতে চুপ থাকবেন না, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের এই বার্তার পরেই বেলাগাম আক্রমণ করেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া...
রাজ্য়ের সাংবিধানিক প্রধানকে এভাবে আক্রমণের মুখে পড়তে হওয়ায় তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে এর মধ্যে। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা যেমন বলেন, 'রাজ্যপাল যখনই সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে গেলেন, সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করতে গেলেন তখনই তৃণমূলের বিষনজরে পড়লেন। এবং মদন মিত্র যে ভাষায় রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছেন তাতে আমি মনে করি এই ধরনের লোকজন সমাজে থাকার যোগ্য নন। অবিলম্বে এঁদের গ্রেফতার করা উচিত।' বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের আবার কটাক্ষ, 'ওরা ভেবেছিল বোধহয় একসঙ্গে পার্টি করলাম, হাতেখড়ি দিলাম, খাওয়াদাওয়া করলাম। তাই বোধহয় আমরা যা চেয়েছি সেটাই হবে। উনি হয়তো রবার স্ট্যাম্প করবেন। সেটি হয়নি। হওয়া উচিতও নয়। এখন তৃণমূল বুঝতে পারছে যে উনি আমাদের পালে পড়বেন না। তখন কষ্ট হচ্ছে।' প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়। আংশিক সংঘাত আগেই শুরু হয়েছিল।আর এবার সম্মুখ সমর। রাজভবন-তৃণমূল 'হনিমুনে'র কার্যত সমাপ্তি! আবার সেই পুরোদস্তুর 'ধনকড় জমানা' প্রত্য়াবর্তনের ইঙ্গিত। অর্থাৎ আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ। নিশীথ প্রমাণিক ইস্য়ুতে রাজভবন কড়া বিবৃতি জারি করতেই দলীয় মুখপত্রে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করল তৃণমূল। যদিও সংঘাতের আবহেই উপাচার্যদের এদিন রাজভবনে তলব করেছেন রাজ্যপাল। নিয়োগ-বিতর্কের মধ্যেই উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করছেন সি ভি আনন্দ বোস। বৈঠকে যোগ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও শিক্ষা দফতরের সচিব। এদিন বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'একই সূত্রে কাজ করবে রাজভবন ও নবান্ন।'