সিমলা : প্রকৃতি দেখাচ্ছে ধ্বংসলীলা। সারা দেশ ব্যাপী যেন দক্ষ-যজ্ঞ। রেহাই পায়নি 'ভগবানের আপন দেশ' কেরল। বৃষ্টি-বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশের সিমলা ও মান্ডি। বাঙালির প্রিয় ভ্রমণ ডেস্টিনেশন সিমলা বিপর্যস্ত। হিমাচল সরকার সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তবে বহু বহু মানুষ নিখোজ ! শুক্রবার রাজ্যের ছয়টি জেলায় আকস্মিক বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আইএমডির বিবৃতি বলছে,এই ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলি হল কাংড়া, কুল্লু, মান্ডি, সিমলা, চাম্বা এবং সিরমাউর।
বুধবার থেকে মেঘভাঙা বৃষ্টি তছনছ করেছে হিমাচলপ্রদেশ। বুধবার রাত থেকে হিমাচলপ্রদেশের মান্ডিতে শুরু হয়েছে মেঘভাঙা বৃষ্টি। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ঘুমের মধ্যেই তলিয়ে মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে মান্ডির চৌহার উপত্যকা। বেশ কয়েকটি বাড়ি ও বহু গাড়ি ভেসে যায় সেখানে। ঘুমের মধ্যেই তলিয়ে যান অনেকে। হিমাচলপ্রদেশ সরকার সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত কয়েকজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ৪৯ জন নিখোঁজ। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে, আশঙ্কা বাসিন্দাদের।
মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু জানিয়েছেন, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। উদ্ধার ও ত্রাণকাজ চলছে। বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকা বাসিন্দা ও পর্যটকদের উদ্ধার করাই প্রথম লক্ষ্য। পর্যটকদের অনুরোধ করা হচ্ছে ছবি তোলার জন্য নদী ও ঝরনার কাছাকাছি না যেতে।
আরও পড়ুন
রাস্তা ভেঙে তছনছ, ধ্বংসলীলা কালিম্পংয়ে, বন্ধ সিকিম যাওয়ার রাস্তা, পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর
প্রতি বছর এই সময়টাতেই এই মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হয় হিমাচলে। গত বছরও এমন বৃষ্টির দাপটেই ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছিল বিঘের পর বিঘে কৃষিজমি! জনসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল গ্রামের পর গ্রাম। প্রতি বর্ষাতেই প্রকৃতির রুদ্ররোষের ভয়াবহ ছবি ধরা পড়ে হিমাচলপ্রদেশের মান্ডি জেলায়।
অন্যদিকে, ভয়ঙ্কার বিপর্যয়ের ছবি উত্তরাখণ্ডেও। বুধবার রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয় কেদারনাথ, রুদ্রপ্রয়াগ, সোনপ্রয়াগ, গৌরীকুণ্ড সহ বিভিন্ন জায়গায়। যার জেরে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে সব নদী। ভেসে গিয়েছে ঘর-বাড়ি-রাস্তাঘাট। রুদ্রপ্রয়াগে আটকে পড়েছেন বেশ কয়েকশো জন। তাঁদের উদ্ধারের কাজ চলছে। উদ্ধারকাজে হেলিকপ্টার নামিয়েছে বায়ুসেনা।
অন্যদিকে প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যয়ের ছবি উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলেও। উত্তরবঙ্গে ধসের জেরে কালিম্পঙে ফের অবরুদ্ধ জাতীয় সড়ক। ভারী বৃষ্টির জেরে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে ধস নেমেছে কালিম্পঙে। তার জেরে ২৯ মাইল এলাকার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ। কালিম্পং-শিলিগুড়ি রুটে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। সিকিম যাওয়ারও লাইফ লাইন দশ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই পরিস্থিতিতে লাভা এবং পনবু হয়ে ঘুরপথে চলছে যাতায়াত।