লন্ডন: এবার মাইক্রোপ্লাস্টিকের (Microplastic found in human vein) খোঁজ মিলল মানবশিরায়! গল্পকথা নয়, নির্জলা বাস্তব। ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অফ হাল (university of hull) এবং হাল ইয়র্ক মেডিক্যাল স্কুলের (hull york medical school) একদল গবেষকের দাবি, এক রোগীর প্রতি গ্রাম স্যাফেনাস ভেন (saphenous vein tissue) টিস্যু (পায়ের ত্বকের উপরের অংশের টিস্যু) থেকে ১৫টি মাইক্রোপ্লাস্টিকের অংশ ও অন্তত পাঁচটি আলাদা রকমের পলিমার পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে গবেষণার ফলাফল 'প্লস ওয়ান' জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে। তার পরই হইচই।
কী জানা গেল?
গবেষকদের দাবি, এক রোগীর বাইপাস সার্জারি করতে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে তাঁদের। এর মধ্যে একটি 'অ্যালকায়েড রেসিন'। সাধারণত কৃত্রিম রং, ভার্নিস এবং এনামেলে এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও মিলেছে পলিভিনাইল অ্যাসিটেট। এটি সাধারণত খাবারদাবার প্যাকেটবন্দি করতে এবং নাইলন তৈরির কাজে লাগে। খোঁজ মেলে EVOH এবং EVA নামে আরও দুটি জিনিসের। এগুলিও নমনীয় প্যাকেজিং পদার্থ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। অধ্যাপক জঁনেট রচেল বলেন, 'আমরা মানবশিরায় এসব পেয়ে স্তম্ভিত। গত বছর আমাদের এক দল ডাচ সতীর্থের গবেষণা থেকে আগেই জেনেছিলাম, রক্ত প্লাস্টিক রয়েছে। কিন্তু তখন এটা জানা ছিল না যে সেগুলি ব্লাড ভেসেল বা রক্তজালিকা পেরিয়ে ভাস্কুলার টিস্যু পৌঁছে যেতে পারে। আমাদের কাজ থেকে এটা স্পষ্ট যে এমনও হতে পারে।'
শিরায় প্লাস্টিকের জের...
বিষয়টি নিয়ে তুমুল হইচই বিজ্ঞানীমহলে। কিন্তু গবেষকদের দলটি জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত মানবশিরায় মাইক্রো স্টিকের অস্তিত্বের অর্থ বা তাৎপর্য কোনওটিই স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানী রচেলের কথায়, 'পেট্রিডিশে যে কোষগুলি পর্যবেক্ষণ করেছি, তাতে অবশ্য সেগুলির মধ্যে প্রদাহ ধরে পড়েছে।' বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই স্যাফেনাস ভেন টিস্যুতে যে পরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে তার পরিমাণ কোলন এবং ফুসফুসে পাওয়া মাইক্রোপ্লাস্টিকের সমতুল। কোথাও আবার বেশি।
স্যাফেনাস ভেন কী?
সাধারণত পায়ের চামড়ার সবথেকে উপর দিকে থাকে। এর মাধ্যমে পা ও গোড়ালি থেকে হৃৎপিণ্ড পর্যন্ত রক্ত সংবহন হয়। সাধারণত এই স্যাফেনাস ভেন বা স্যাফেনাস শিরার তিনটি স্তর থাকে। করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফট বা সাধারণ কথায় বাইপাস সার্জারির সময় এই ভেনই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেই শিরায় মাইক্রোপ্লাস্টিকেই অস্তিত্ব মেলায় তীব্র শোরগোল বিজ্ঞানী মহলে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই গবেষণার আগে পর্যন্ত মানবশরীরের রক্তজালিকা-সহ কোনও শারীরবৃত্তীয় প্রাচীর পেরিয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিক টিস্যু পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে এমন নজির ছিল না। সে দিক থেকে বিষয়টি চমকে দেওয়ার মতোই।
আরও পড়ুন:চারপাশে এত দুর্বৃত্ত, একা সামলাতে পারছেন না দিদি, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য বিচারপতির