নয়াদিল্লি: অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের (Anganwadi Workers) ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের ( Supreme Court)। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়করাও সুস্থ এবং নিরাপদ জীবনের অধিকারী। ভাল ভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে তাঁদেরও। তাই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরির সুবাদে তাঁদেরও গ্র্যাচুইটি প্রাপ্য (Gratuity)।  এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একেবারে তৃণমূল স্তরে কর্মরত ২৫ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়ক উপকৃত হবেন। 


গ্র্যাচুইটি প্রাপ্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়কদেরও


আদালত জানিয়েছে, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়কদের জন্য উন্নত কাজের পরিবেশ কাম্য। তাই তাঁদের ক্ষেত্রেও ১৯৭২ সালের পেমেন্ট অফ গ্র্যাচুইটি আইন (Payment of Gratuity Act, 1972) প্রযোজ্য।  তাঁরা যাতে সবরকম সুযোগ সুবিধা পান, তার জন্য কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। 


সোমবার বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং অজয় রাস্তোগীর ডিভিশন বেঞ্চ এমন নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানায়, কাজের প্রকৃতি বিবেচনা করে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়কদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং তাঁদের ভাল পরিষেবা দেওয়ার সময় এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিমা প্রকল্পের আওতায় তাঁদের প্রাপ্য সুযোগ সুবিধাও অকিঞ্চিৎকর। তাই কেন্দ্রীয় সরকার তো বটেই, রাজ্যের সরকারগুলিরও উচিত, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়কদের দুঃখ, দুর্দশা মোচন করা। সমাজের এত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যাঁরা সামলাচ্ছেন, এটুকু পাওয়ার অধিকার রয়েছে তাঁদের।


আরও পড়ুন: Corona Vaccination : এবার ৬ বছর পেরোলেই করোনার ভ্যাকসিন ! কেন্দ্রের নতুন নিয়ম জানুন





অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়কদের গ্র্যাচুইটির আওতায় আনার দাবি উঠছিল দীর্ঘদিন ধরেই। সেই নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়কদের তরফে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। হাইকোর্টে মামলা খারিজ হয়ে গেলে, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। যদিও গুজরাত সরকার তার বিরোধিতা করে পাল্টা আবেদন জানায়।


আদালতে গুজরাত সরকারের দাবি ছিল, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের গ্র্যাচুইটি দিতে গেলে রাজ্যের ঘাড়ে ২৫ কোটি টাকার অর্থনৈতিক বোঝা চাপবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলি জানান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে কোনও ব্যবসায়িক লাভ নেই। এটি শুধুমাত্র একটি জনকল্যাণ প্রকল্প।  সেটি অসংগঠিত ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে। তাই গ্র্যাচুইটির প্রশ্ন ওঠে না। 


রাজ্য এবং কেন্দ্র, উভয়কেই নির্দেশ আদালতের


কিন্তু সোমবার শুনানি চলাকালীন, গুজরাত সরকার এবং কেন্দ্রের সেই যুক্তি খারিজ করে দেয় আদালত। বিচারপতিরা জানান, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে শিশুদের শরীরে পুষ্টি জোগানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়করা।  ভবিষ্যৎ সমাজের ভিত গড়ার গুরুদায়িত্ব তাঁদের কাঁধে।   তাই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদে-সহায়কদের অংগঠিত ক্ষেত্রের আওতায় ফেলে তাঁদের সুস্থ জীবনযাপনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। করোনার সময় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন বলেও মনে করিয়ে দেয় আদালত।