পানাজি: ভোট মিটতেই দলে দলে প্রস্থান শুরু হয়েছে। এ বার আরও ধাক্কা খেল তৃণমূল (TMC in Goa)। সেখানে দলের প্রধান পদে এতদিন নিযুক্ত ছিলেন কিরণ কান্দোলকর (Kiran Kandolkar)। বুধবার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন জোড়াফুলের সঙ্গে। নির্বাচনে তৃণমূলের ব্যর্থতার জন্য ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে (Prashant Kishor) সরাসরি দুষেছেন তিনি। কিরণের কথায়, "গোয়ায় তৃণমূলের কোনও ভবিষ্যৎ নেই।"
মমতা-অভিষেকের উপর ক্ষুব্ধ নন কিরণ
দু'দিন আগেই গোয়ায় নতুন করে দলের ভিত গড়ার কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। কিন্তু এ বার দলের সভাপতিই কার্যত পিঠটান দিলেন সেখানে। মাপুসায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "গোয়ায় নির্বাচনের দায়িত্ব আইপ্যাক-কে দিয়েছিলেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই আমার। প্রশান্ত কিশোর আইপ্যাকের মাথায় রয়েছেন। তাই ব্যর্থতার দায় যদি কারও উপর বর্তায়, তাহলে তাঁর উপরই বর্তায়। প্রার্থী হিসেবে আমরা ব্যর্থ হইনি। এখানে আইপ্যাক ঢাকঢোল পিটিয়েই এসেছিল। কিন্তু গোয়ায় কৌশল রচনায় ব্যর্থ হয়েছে তারা। প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল আমার। গোয়ার জন্য বড় পরিকল্পনা রয়েছে ববে জানিয়েছিলেন। তিন্তু নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পেরেছিলাম, ওঁর সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে।"
আরও পড়ুন: Kamal Nath Resigns: দায়িত্ব ছাড়লেন কমলনাথ, প্রশান্ত কিশোরের ওষুধেই কি রোগ সারানোর পথে কংগ্রেস!
এ বছর বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর গোয়ার আলদোনা থেকে কিরণকে প্রার্থী করে তৃণমূল। গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টি ছেড়ে গত বছর নভেম্বরে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। এ বছর জানুয়ারির মাঝামাঝি সেখানে দলের সভাপতি নিযুক্ত হন। তবে ভবিষ্যতের জন্য তৃণমূলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কিরণ। তবে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি তাঁর সমর্থকদের তৃণমূলের সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রশান্ত কিশোরকে কাঠগড়ায় তুলেছেন কিরণ
অতি সম্প্রতিই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কিরণ। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, গোয়া নিয়ে স্পষ্ট কোনও লক্ষ্য রয়েছে বলে অভিষেকের বক্তব্যেও ধরা পড়েনি। তাই একরকম বাধ্য হয়েই তাঁকে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। প্রশান্তর বিরুদ্ধেও মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন কিরণ। তাঁর দাবি, কংগ্রেসের সামনে নিজেকে সঠিক প্রমাণ করতে তৃণমূলকে ব্যবহার করেছেন প্রশান্ত। কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়ে,তাদের ব্ল্যাকমেইল করাই প্রশান্তর উদ্দেশ্য ছিল বলেও অভিযোগ করেন কিরণ,যাতে কংগ্রেস তাঁকে নিতে বাধ্য হয়। যদিও কিরণের এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ প্রশান্ত নিজেই কংগ্রেেস যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ফিরিয়েছেন।
তবে এই প্রথম নয়, নির্বাচনের পর থেকেই গোয়ায় তৃণমূলে লাগাতার ভাঙন চোখে পড়েছে। বুধবারই তারক আরোলকর, লিয়াও দিয়াজ, সন্দীপ ভাজরগর সেখানে তৃণমূল থেকে ইস্তফা দেন। দু'দিন আগেই কিরণের স্ত্রী কবিতা কান্দোলকর তৃণমূল ছাড়েন।