সঞ্চয়ন মিত্র, বারাণসী : কাশীর (Kashi )চেহারা আগে ছিল অন্যরকম। এমনকী কাশী বিশ্বনাথ দর্শনে আসা পুণ্যার্থীদেরও মন্দিরে (Kashi Vishwanath) ঢোকার জন্য আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই সরুগুলির মধ্যে দিয়েই লাইন করে এগোতে হত! কিন্তু এখন আমূল বদলে গিয়েছে মন্দির চত্বর। এখন ঘাট থেকে সরাসরি মন্দির দেখা যাবে। বর্তমানে গঙ্গার ওপর থেকে সরাসরি মন্দিরে প্রবেশের রাস্তা ( Kashi Vishwanath Corridor ) তৈরি হচ্ছে।


এখন গঙ্গার ঘাট থেকেই দেখা মেলে কাশী বিশ্বনাথের মন্দিরের চূড়ার। এতদিন মন্দিরের বাইরে থেকে চূড়া দেখা যেত না। কিন্তু এখন যেভাবে তৈরি হয়েছে, তাতে গঙ্গার ঘাট থেকে কাশীবিশ্বনাথের চূড়া দেখা যাচ্ছে। পুরনো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের আয়তন ছিল ২ হাজার বর্গমিটারের মতো। পুনর্গঠনের পর যা বেড়ে গিয়েছে প্রায় ২৫ গুণ!

আরও পড়ুন :


' কাশী পৃথিবীর কোনও অংশ নয়, এটিকে শিব ত্রিশূলে ধারণ করে রেখেছেন' পড়ুন বারাণসী নিয়ে নানা কিংবদন্তী


বর্তমানে এই যে মূল মন্দির, তার সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের বেশকিছু বাড়ি ও মন্দির অধিগ্রহণ করে নিয়েছে সরকার। এখন কাশীতে পা দিলে মনে হবে, যেন রাজসূয় যজ্ঞ চলছে! মন্দির ঘিরে যে বিশাল কর্মযজ্ঞ, তার পরিচয় পাওয়া যায় পিছনের দিকে এলে। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পুনর্গঠনের জন্য যেসব দোকান ভাঙা পড়েছে, তার মধ্যে ছিল নন্দলাল কেশরীর প্রসাধন সামগ্রীর দোকানও! তিন বছর আগে যা ভাঙা পড়ে। সরকার থেকে আর্থিক সাহায্যও পেয়েছেন। এখন মন্দিরের সামনের দিকে নতুন দোকান করেছেন। 


পাশেই জনার্দন গিরির দোকান। তবে তাঁর দোকানটি ভাঙা পড়েনি। তাঁর দোকানের গা ছুঁয়েই চলে গিয়েছে নতুন মন্দিরের দেওয়াল। কাশী বিশ্বনাথ পুনর্গঠনের জন্য বেশকিছু বাড়ি, দোকান ভাঙা পড়েছে, তাই-ই নয়, একাধিক মন্দিরও সরিয়ে ফেলা হয়েছে, পরে সেগুলি ফের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও করা হয়েছে। মন্দির চত্বরেই এতখানি বদল! যাঁরা আগেও কাশী বিশ্বনাথ দর্শন করেছেন, এখন সেই পুণ্যার্থীরা মন্দিরের ভিতরে ঢুকলে অবাক হয়ে যাবেন! গোটা মন্দিরের খোলনলচেই যেন বদলে দেওয়া হয়েছে। একেবারে নতুনরূপে সেজে উঠেছে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির। 


আগে গঙ্গার ধার থেকে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে প্রবেশের কোনও রাস্তা সেভাবে ছিল না। পুণ্যার্থীদের গঙ্গায় স্নান সেরে, গঙ্গার জল নিয়ে অপরিসর গলি দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে হত। কিন্তু এখন ললিতা ঘাট থেকে সরাসরি ঢোকা যাবে মন্দিরে। 


কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বরেই রয়েছে মা অন্নপূর্ণার মন্দির। কথিত আছে, এখানে পুজো দিলে সেই ভক্তের কোনওদিন অন্নের অভাব হয় না! স্বয়ং শিব তাঁর ওপর প্রসন্ন হন। এখানেই দেবী অন্নপূর্ণার পাশে আরেকটি ছোট মূর্তি রয়েছে। বলা হয়, এটিই নাকি ৮-১০ বছর আগে বিদেশে পাচার হয়ে গিয়েছিল। তারপর বিদেশ থেকে এনে এটিকে ফের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।