নয়াদিল্লি: বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্র। বরফে ঢাকা রুক্ষ প্রান্তর। একদিকে শত্রু সেনার বুলেট, অন্যদিকে ভয়ঙ্কর প্রতিকূল প্রকৃতি। এর মাঝেই মাথা উঁচু করে দেশকে রক্ষা করেন ভারতীয় সেনার বীর জওয়ানরা। শত্রু সেনার বুলেট ব্য়র্থ হয় জওয়ানের সাহসের সামনে। কিন্তু হার মানানো যায় না প্রকৃতিকে। তেমনই একটি দিন ছিল ১৯৮৪ সালের ২৯ মে। সিয়াচেনের (Siachen) বুকে নেমে এসেছিল ভয়ঙ্কর হিমধ্বস। আর তাতেই হারিয়ে গিয়েছিলেন অপারেশন মেঘদূতে (Operation Meghdhoot) অংশ নেওয়া ল্যান্স নায়েক চন্দ্র শেখর (Lance Naik Chandra Sekhar)। তারপর ২০২২ সাল। দীর্ঘ ৩৮ বছর পরে খোঁজ মিলল বরফের তলায় চাপা পড়ে যাওয়ার তাঁর দেহাবশেষের। খোঁজ পেয়েছেন ভারতীয় সেনারাই।
উত্তরাখন্ডের (Uttarakhand) হলদোয়ানির বাসিন্দা ছিলেন চন্দ্র শেখর। ১৯ কুমায়ুন রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন তিনি। হারিয়ে যাওয়ার ৩৮ বছর পরে হিমবাহের একটি পরিত্যক্ত বাঙ্কার থেকে তাঁর দেহাবশেষ পাওয়া যায়। সেনার নর্দান কম্যান্ডের তরফ থেকে এই খোঁজের কথা জানানো হয়েছে।
কীভাবে মিলল খোঁজ:
ভারতীয় সেনার একটি দল খোঁজ পায়। ওই পরিত্যক্ত বাঙ্কারে নজরদারি চালানোর সময় খোঁজ মেলে বীর সেনার দেহাবশেষের। সেনার তরফে জানানো হয়েছে। একটি দেহাবশেষের খোঁজ পাওয়া যায়। সেটির সঙ্গেই একটি ডিস্ক ছিল। সেখানে একটি নম্বর (সেনার পরিচয় সংক্রান্ত) লেখা ছিল। তাঁর সাহায্যেই চন্দ্র শেখরের পরিচয়ের খোঁজ মেলে। ১৩ অগাস্ট এই খোঁজ মেলে।
জানানো হল বাড়িতে:
১৪ অগাস্ট চন্দ্র শেখরের স্ত্রী শান্তি দেবীকে এই ঘটনার বিষয়ে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে সেনাকর্মীর দেহাবশেষ পরিবারের কাছে পাঠানো হবে বলে সূত্রের খবর। তারপরে উত্তরাখন্ডের হলদোয়ানিতে তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের উপস্থিতিতে ল্যান্স নায়েক চন্দ্র শেখরের শেষকৃত্য হবে।
অপারেশন মেঘদূত:
১৯৮৪ সালে পাকিস্তানের (Pakistan) আগ্রাসন ঠেকাতে এই অপারেশন করেছিল ভারতীয় সেনা (Indian Army )। সিয়াচেন হিমবাহের বেশ কিছু কৌশলগত অবস্থান পাকিস্তানের হাত থেকে বাঁচিয়ে নিজেদের দখলে রাখতে এই অভিযান করেছিল ভারতীয় সেনা। সেই অভিযানেই ছিলেন ল্যান্স নায়েক চন্দ্র শেখর। অভিযান চলাকালীন ভারতের সেনাবাহিনীর একটি হিমধ্বসের মুখোমুখি পড়ে। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন ভারতীয় সেনা প্রাণ হারান। নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন চারজন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন ল্যান্স নায়েক চন্দ্র শেখর।
আরও পড়ুন: প্রথা মেনে আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে বিটিং রিট্রিট, কোথা থেকে এল ভারতে?