নয়াদিল্লি: বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের বিচারব্যবস্থার অখণ্ডতার (judiciary's integrity) রক্ষার বিষয়ে সতর্ক করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে (CJI Chandrachud) চিঠি লিখলেন দেশের ৬০০ জনের বেশি আইনজীবী (lawyers)। বর্তমানে যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তার বিষয়ে আগাম সতর্ক করে এই চিঠি (lawyers write to CJI) লিখেছেন তাঁরা। বিষয়টি বিচার ব্যবস্থার উপর হুমকি বলেও অভিযোগ করেছেন। 


বর্ষীয়ান আইনজীবী হরিশ সালভে (senior advocate Harish Salve) ও বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান মানান কুমার মিশ্র (Bar Council of India chairman Manan Kumar Mishra)-সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৬০০-এর বেশি আইনজীবী দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে চিঠি লিখে বর্তমান পরিস্থিতি যা তা বিচার ব্যবস্থার অখণ্ডতা উপর হুমকি হতে পারে এই উদ্বেগ জানিয়ে এই বিষয়ে নিজেদের আতঙ্কের কথা উল্লেখ করেছেন।  ওই চিঠিতে আইনজীবীরা কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারে চেষ্টা করছে, আদালতকে প্রভাবিত করছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি ভিত্তিহীন অভিযোগ ও রাজনৈতিক এজেন্ডা দিয়ে বিচার বিভাগের সুনামকে ক্ষুন্ন করা করছে বলেও দাবি করেছেন। 


ওই চিঠিতে আইনজীবীরা আরও উল্লেখ করেছেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা যে সমস্ত ক্ষেত্রে দুর্নীতির  (corruption) অভিযোগে অভিযুক্ত রয়েছেন। সেই সমস্ত মামলার ক্ষেত্রেই বিশেষত প্রমাণ দাখিল করার বিষয়ে এই ধরনের ছক কাজে লাগানো হয়। এই সমস্ত ক্ষেত্রে আদালতের সুনাম নষ্ঠ হওয়ার পাশাপাশি আদালতের বিশ্বাসযোগ্যতাও নষ্ট হচ্ছে।


চিঠিতে উল্লিখিত উদ্বেগজনক কৌশলগুলির মধ্যে একটি হল বিচার বিভাগের কার্যকারিতা সম্পর্কে একটি তির্যক দৃষ্টিভঙ্গি চিত্রিত করার লক্ষ্যে বিচার ব্যবস্থায় মিথ্যা বর্ণনার সমারোহ করা। যা আদালতের স্বর্ণযুগের সঙ্গে সমঝোতা। তাই আইনজীবীরা বলছেন, এই ধরনের বিষয় দূর করা অত্যন্ত দরকার বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষদের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য। চিঠিতে আইনজীবীরা আরও জানিয়েছেন মিথ্যা ন্যারেটিভ সাজিয়ে বিচার ব্যবস্থার এই অবনমনের চেষ্টা আগামী দিনে আদালতের প্রতি ভরসা রাখা মানুষদের হতাশ করবে যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হিসেবে পরিগণিত হবে। না হলে আদালতের পাশাপাশি বিচারকদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। 


আইনজীবীদের চিঠিতে একটা প্রক্রিয়া কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পাশাপাশি সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিজেদের দুর্নীতি ও অপরাধ থামানোর জন্য আদালতের বেঞ্চের সিদ্ধান্তকেও নিজেদের স্বপক্ষে আনার জন্য বেঞ্চ ফিক্সিংও করেন। যা বিচারকদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দেয়। এই ধরনের চেষ্টা শুধুমাত্র বিচারব্যবস্থাকে অপমান করা নয়, বিচার প্রক্রিয়ার আদর্শ ও আইনকে ক্ষতিগ্রস্তও করে। যে সমস্ত দেশে আইনের কোনও শাসন নেই সেখানকার মতো এই দেশেও আমাদের বিচারব্যবস্থা ও বিচারের আদর্শকে এবং প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত করে। শুধুমাত্র সমালোচনা করার জন্য নয়, বিচার প্রক্রিয়ার এই অবনমনের মাধ্যমে ওরা সোজাসুজি আমাদের বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের যে বিশ্বাস ও ভরসা নষ্ট করে। আমাদের আইনের সঠিক বাস্তবায়নের জন্য এটা একটা হুমকি। 


আরও পড়ুন: Arvind Kejriwal: ED-সামনে রেখে তোলাবাজি BJP-র, ফাঁদে ফেলা হচ্ছে তাঁকে, আদালতে বললেন কেজরিওয়াল