নয়াদিল্লি: বিরোধীদের ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ খারিজও করেনি কেন্দ্র, আবার সরাসরি স্বীকারও করেনি। সংসদের বাজেট অধিবেশনের ঠিক আগে ফের তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াল পেগাসাস-কাণ্ড (Pegasus Row)। কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রতিনিধি নন, বরং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই (Narendra Modi) ইজরায়েলে (Israel) গিয়ে স্পাইওয়্যার (Israeli Spyware Pegasus) কেনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন বলে এ বার সামেন এল। আর তাতেই ফের একযোগে কেন্দ্রকে নিশানা করতে নেমে পড়ল বিরোধী শিবির। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের (Treason) অভিযোগ তুলছে তারা।


২০১৭ সালে ইজরায়েল সফরে গিয়েছিলেন মোদি। সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির পাশাপাশি ২০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে পেগাসাস স্পাইওয়্যার চুক্তিতেও তিনি স্বাক্ষর করেছিলেন বলে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আমেরিকার সংবাদপত্র ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’। ওই প্রতিবেদনটি সামনে আসার পরই নতুন করে পারদ চড়তে শুরু করেছে রাজনীতির।


পেগাসাস নিয়ে এ দিন কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi)। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি আধিকারিক, বিরোধী শিবিরের রাজনীতিক, সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগের উপর চরবৃত্তি করতেই মোদি সরকার পেগাসাস কিনেছিল। সকলের ফোনে আড়ি পেতেছিল কেন্দ্র। এটা দেশদ্রোহ। মোদি সরকার দেশদ্রোহের অপরাধে সামিল।’



কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘বেআইনি এবং অসংবিধানিক ভাবে দেশের নাগরিকদের উপর চরবৃত্তির জন্য পেগাসাস স্পাইওয়্যার কিনেছিল কেন্দ্র। এর জন্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়ী। এটা প্রজাতন্ত্রের অপহরণ এবং দেশদ্রোহ।’’ রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও এ নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, ‘‘পেগাসাস নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়বে কেন্দ্র।’’ যদিও বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সংসদের অধিবেশনের সময় অশান্তি পাকাতে কিছু না কিছু অজুহাত চাই। তাই এখন ফের পেগাসাস নিয়ে সরব হচ্ছে বিরোধীরা।’’


আরও পড়ুন: SBI Update: স্টেট ব্যাঙ্কে মহিলা কর্মী নিয়োগের নিয়মে বদল, মানতে হবে এই রুল


ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পোগাসাস ব্যবহার করে বিরোধী নেতা-নেত্রী, সাংবাদিক, বিচারপতিদের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগে বিদ্ধ কেন্দ্রীয় সরকার। রাহুল গাঁধী, অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, আইনজীবী, নির্বাচন কমিশনার, সিবিআই-কর্তা সহ একাধিক ব্যক্তির মোবাইল হ্যাক করে আড়ি পাতার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। এর মাধ্যমে মোবাইল ফোনের কথোপকথন থেকে, মেসেজ, ক্যামেরায় তোলা ছবি, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সব কিছু হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে জানা গিয়েছে। পেগাসাস নিয়ে আর্থিক লেনদেনের কথা অস্বীকার করলেও, সুপ্রিম কোর্টে জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে এ নিয়ে বিশদ তথ্য দেওয়া থেকে সরে আসে কেন্দ্র। তবে ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল বলে সন্দেহ করছেন যাঁরা, চলতি মাসের শুরুতে তাঁদের কাছ থেকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত তদন্ত কমিটি।