নয়াদিল্লি: ২ দিনের ভারত সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। আজ, সোমবার নয়াদিল্লি এসে পৌঁছন তিনি। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। ভারত-জাপান দ্বিপাক্ষিত সম্পর্কে নয়া মাত্রা দিতেই এই সফর বলে খবর সংবাদ সংস্থা সূত্রে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী 'free and open Indo-Pacific'-এর কথা বলবেন। এই ভৌগোলিক এলাকায় ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব আলোচনায় উঠে আসতে পারে। এদিন ভারতে এসে রাজঘাটে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন ফুমিও কিশিদা।
মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ:
পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়। বুদ্ধ জয়ন্তী পার্ক একসঙ্গে ঘুরে দেখেন নরেন্দ্র মোদি এবং ফুমিও কিশিদা। সেখানে ভারতীয় খাবার চেখে দেখতে দেখা যায় জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে। সেখানে ফুচকা, লস্য়ি, আম পান্নার স্বাদ নেন তিনি। ভাইরাল হয়েছে সেই ছবি। জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের বিখ্যাত স্ট্রিট ফুড চাখতে দেখে অবাক নেটিজেন। পরে আম পান্নার স্বাদ নিতে দেখা যায় তাঁকে। খাওয়ার সময় দুই দেশের প্রধানকে কথাও বলতে দেখা গিয়েছে।
ভারত সফরের আগেই একটি ট্যুইট করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। সেখানে তিনি লিখেছেন, 'আমি ভারতে যাব এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করব। এই বছর জাপান G7-এর সভাপতিত্ব করবে, ভারত G20-এর সভাপতিত্ব করবে। আন্তর্জাতিক স্তরে যে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা মোকাবিলার জন্য দুই দেশ কী করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হবে।' দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার কাজও হবে বলে বার্তা দিয়েছেন তিনি। ভারতে থাকার সময়েই Free and Open Indo-Pacific (FOIP)-এর জন্য নয়া পরিকল্পনাও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। সুষমা স্বরাজ ভবনে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স আয়োজিত একটি বক্তৃতার সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাঁর "ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক প্ল্যান ফর পিস" উন্মোচন করবেন বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে।
ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রতি জাপানের নীতি এবং দৃষ্টিভঙ্গি কেমন তা এই ঘোষণা পরে স্পষ্ট করে বোঝা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের ভূমিকাও ঠিক কী হতে চলেছে তা বোঝা যাবে। গত বছরের জুনে, সিঙ্গাপুরে শাংরি-লা আলোচনা (Shangri-La Dialogue)-এর সময়ে প্রধানমন্ত্রী কিশিদা বলেছিলেন যে তিনি শীঘ্রই ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করবেন।
জাপান এই অঞ্চলে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য একটি মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য চাপ দিচ্ছে। পূর্ব চিন সাগর, দক্ষিণ চিন সাগর এবং তাইওয়ান প্রণালীতে চিনের আগ্রাসী সামরিক পদক্ষেপ নিয়েও উদ্বিগ্ন জাপান। চিনের ক্ষেত্রে ভারত ও জাপান প্রায় একই দিকে রয়েছে। কিন্তু পার্থক্যও রয়েছে, যেমন রাশিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পক্ষে জাপান, যদিও ভারত তা মনে করে না। এমনকী G20-এর মঞ্চ যাতে ওই কাজের জন্য না ব্যবহার করা হয় তার চেষ্টা করেছে ভারত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য শুধুমাত্র রাশিয়াকে দোষ দিতে চায় না ভারত। যদিও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারত-জাপান সম্পর্ক অধিকাংশ সময়েই মসৃণ পথেই চলেছে।
আরও পড়ুন: চন্দনকাঠের বুদ্ধমূর্তি! জাপানের রাষ্ট্রপ্রধানকে উপহার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর