লখনউ: হাথরস গণধর্ষণ কাণ্ড (Hathras case) নিয়ে খবর সংগ্রহ করতে পা রেখেছিলেন উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh)। তার পর আর ঘরে ফেরা হয়নি সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানের (Siddique Kappan)। দু’-দু’টি মামলায় জামিন মঞ্জুর হলেও কাটেনি বন্দিদশা। দু’বছরের বেশি সময় পর, বৃহস্পতিবার শেষ পর্যন্ত মুক্তি পেলেন তিনি। গুনে গুনে ঠিক ২৮ মাস পর বেরোলেন লখনউয়ের জেলের বাইরে।
দু’-দু’টি মামলায় জামিন মঞ্জুর হলেও কাটেনি বন্দিদশা
বৃহস্পতিবার মুক্ত হাওয়ার পরশ পেলেন সিদ্দিক। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “বর্বর আইনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব আমি। জামিন পাওয়ার পরও আমাকে জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। আমি জেলে থাকলে কার সুবিধা জানি না। গত দু’বছর অত্য়ন্ত কঠিন ছিল আমার জন্য। কিন্তু ভীত হইনি আমি। সাংবাদিকতা কোনও অপরাধ নয়।”
বুধবার বিকেলেই ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল সিদ্দিকের। কিন্তু বিশেষ আদালতের বিচারক বার কাউন্সিলের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাতেই বৃহস্পতিবার হয়ে গেল সিদ্দিকের ছাড়া পেতে।
আরও পড়ুন: Adani FPO: কারচুপির অভিযোগে উত্তাল বাজার, বাজেটের দিনই FPO তুলে নিল আদানি গোষ্ঠী
২০২০ সালে উত্তরপ্রদেশের হাথরসে খবর সংগ্রহ করতে যাচ্ছিলেন সিদ্দিক। ২০ বছরের দলিত কন্য়াকে গণধর্ষণ এবং মৃত্যুর ঘটনায় তখন তপ্ত রাজ্য। হাথরসের ওই কন্যা গণধর্ষণের শিকার হয়ে দুই সপ্তাহ দিল্লির হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে যুঝছিলেন। শেষ মেশ মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের অভিযোগ, ময়নাতদন্ত না করে, আইনের তোয়াক্কা না করে, মেয়েটির দেহ রাতের অন্ধকারে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দেয় পুলিশ।
সেই ঘটনার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল গোটা দেশ। হাথরসে খবর সংগ্রহ করতে গেলে সেই সময় সিদ্দিককে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তাদের অভিযোগ ছিল, সিদ্দিক নাকি অশান্তি সৃষ্টি করতেই হাথরস যাচ্ছন! এর পর তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ, দেশবিরোধী সন্ত্রাসী কাজকর্মের কঠোর UAPA ধারায় মামলা দায়ের হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের মামলাও দায়ের করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। নিষিদ্ধ পিপলস ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া সংগঠন থেকে তিনি টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় ভারত ১৫০তম স্থানে নেমে গিয়েছে ভারত
শেষ মেশ, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টে জামিন মঞ্জুর হয় সিদ্দিকের। তার তিন মাস পর আর্থিক তছরুপ মামলাতেও জামিন পান সিদ্দিক। কিন্তু আইনি জটিলতা দেখিয়ে তার পরও আটকে রাখা হয় সিদ্দিককে। তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন সুশীল সমাজের মানুষ জন। সিদ্দিকের মতো সাংবাদিককে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে জেলবন্দি করাতেই বিশ্ব সূচকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় ভারত ১৫০তম স্থানে নেমে গিয়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও দেশের ন’জন সাংবাদিক জেলে রয়েছেন।