অযোধ্যা: নবনির্মিত রামমন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে উৎসবের আমেজ। সেই আবহে জনরোষের শিকার হলেন বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহা। কর্নাটকে রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। সেখানে যোগ দিতে গেলে প্রতাপের বিরুদ্ধে জনরোষ আছড়ে পড়ে। সংবাদমাধ্যমের সামনেই প্রতাপকে ‘দলিত বিরোধী’ বলে ডাকতে শুরু করেন স্থানীয়রা। নির্বাচন মিটে যাওয়ার পর কখনও মানুষের কাছে প্রতাপ পৌঁছননি বলেও দাবি করেন সকলে। (BJP MP Pratap Simha)


বিজেপি-র টিকিটে কর্নাটকের মহীশূর-কোডাগু থেকেই সাংসদ নির্বাচিত হন প্রতাপ। সম্প্রতি সংসদভবন হামলায় নাম জড়িয়েছিল তাঁর। প্রতাপের দফতর থেকে দেওয়া পাস নিয়ে কয়েক জন লোকসভায় ঢুকে পড়েন এবং সেখানে উৎপাত চালান। সেই ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন প্রতাপ। বিরোধীরা তাঁর সাংসদপদ বাতিলের দাবিও জানান। যদিও তার কোনও প্রভাব পড়েনি প্রতাপের উপর। এখনও সাংসদ রয়েছেন তিনি। (Ram Mandir Inauguration)


কিন্তু সোমবার নিজের কেন্দ্রে গিয়েই জনরোষের মুখে পড়লেন প্রতাপ। রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে সেখানকার গুজ্জেগৌদানপুর গ্রামে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। স্থাপিত হয় মন্দির নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তরও। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা, দলিত সম্প্রদায়ের কৃষিক রামদাসের দেওয়া কালো পাথরে ‘রামলালা’র মূর্তি ফুটিয়ে তুলে অযোধ্যায় পাঠিয়েছেন শিল্পী অরুণ যোগীরাজ। গ্রামে মন্দির তৈরির জন্যও জমি দিয়েছেন রামদাস। বিশেষ দিনে তাই সেখানেও অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়।



আরও পড়ুন: Ayodhya Ram Mandir Inauguration: মুখোমুখি হয়ে বাকরুদ্ধ, চোখ বেয়ে নেমে এল অশ্রুধারা, অযোধ্যায় হঠাৎ দেখা উমা-ঋতম্ভরার


কিন্তু এদিন ওই অনুষ্ঠানে প্রতাপ পৌঁছতেই পরিস্থিতি তেতে ওঠে। তাঁকে দেখেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। প্রতাপকে ঘিরে বিক্ষওভ দেখান সকলে। ওই এলাকার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য সুরেশ বাক্যবাণে বিদ্ধ করেন প্রতাপকে। বলেন, “গত ১০ বছরে একবারও গ্রামে আসেননি আপনি। এখন রাজনৈতিক স্বার্থে এসে হাজির হয়েছেন। কখনও আমাদের কথা শোনার প্রয়োজন বোধ করেননি। আপনাকে এখানে চাই না আমরা।”


স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ উগরে দেন সংবাদমাধ্যমেও। তাঁদের অভিযোগ, গত বছর এলাকার দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ এবং তাঁদের নেতাকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেন প্রতাপ। ওঁর মর্জি অনুযায়ী গ্রামের কিছু মানুষকে গ্রেফতারও করা হয়। কখনও গ্রামবাসীদের সমস্যার কথা জানতে চাননি প্রতাপ। সামনে লোকসভা নির্বাচন। এখন তাই ভোট কুড়োতে এসে হাজির হয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।  


গ্রামহাসীদের অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি প্রতাপ। কিন্তু বিক্ষোভের মুখে পড়ে ওই অনুষ্ঠানে আর যোগ দেওয়া হয়নি তাঁর। প্রতাপের সহযোগীরা গ্রামবাসীদের শান্ত করতে চাইলেও, লাভ হয়নি। তাতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই গ্রাম থেকে বেরিয়ে যান তিনি।