কলকাতা : দীর্ঘদিন ধরেই প্রখ্যাত শিল্পীর চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন স্মরজিৎ নস্কর। ইদানিং তাঁকেও বাঁটুলের স্রষ্টা বলতেন অনেক কথা। আসলে দীর্ঘদিন রোগের সঙ্গে লড়াই জারি রেখেছেন। বারবার খারাপ অবস্থার মধ্যে থেকেই ফিরেছেন রোগ জয় করে। এবারও হয়ত ফিরে আসবেন, বিশ্বাস ছিল তাঁর। তাই পৃথিবীর সঙ্কটকালে শিল্পীপ বড় সাধ ছিল, এই করোনা নামক ভয়ানক শত্রুটাকে ঘায়েল করাবেন বাঁটুলকে দিয়েই। সেই স্বপ্নই দেখতেন। চিকিৎসককে বলেছিলেন, ' এবার বাঁটুলকে দিয়ে করোনাকে হারাতে হবে ' 


কিন্তু তা আর হল কই। চলে গেলেন প্রবাদপ্রতিম শিল্পী। পড়ে রইল এই সব কিছু, পড়ে রইল ইতিহাস। দিকশূন্যপুরে পাড়ি দিলেন শিল্পী। তবু হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুল, নন্টে ফন্টের মধ্যেই রয়ে যাবেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, ২০১৭ সাল পর্যন্ত ‘হাঁদা ভোঁদা’ এঁকেছেন শিল্পী। অনেকে বলেন, একক লেখক-শিল্পীর তৈরি, বিশ্বের সবচেয়ে বেশিদিন ধরে চলা কমিক স্ট্রিপ ‘হাঁদা ভোঁদা’। কমিকসের পথে বদল এসেছে বাঁটুলের চেহারাতেও। যত দিন গিয়েছে কোমর আর পা সরু হয়েছে বাঙালির এই সুপারহিরোর। চওড়া হয়েছে ছাতি। ষাটের দশকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পটভূমিকায় বদল আসে কাহিনিতে। বাঁটুলকে যুদ্ধের কাজে লাগান শিল্পী। শত্রুসেনার ট্যাঙ্ক, প্লেন হেলায় ধ্বংস করে সে। তুমুল জনপ্রিয় হয় বাঁটুল দি গ্রেট। 

আরও পড়ুন : 


'কমিকস শিল্প জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি' নারায়ণ-প্রয়াণে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর




মহামারীর জন্য প্রায় দু'বছর ধরে ঘরবন্দি হাঁসফাঁস অবস্থা। কঠিন এই পরিস্থিতিতেও মন ভাল করে দেয় তাঁর এইসব কমিকস। শিল্পীর ইচ্ছা ছিল, বাঁটুলকে দিয়ে করোনাও তাড়াবেন। কিন্তু তা আর হল না। চলে গেলেন হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুলের স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ । গত ২৫ দিন ধরে ভর্তি ছিলেন বেলভিউ হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তারপরই আসে দুঃসংবাদ। 


শিল্পীর প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, '  তাঁর প্রয়াণে কমিকস শিল্প জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি নারায়ণ দেবনাথের পরিবার-পরিজন ও  অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। '