কলকাতা: '....টনিক' মুক্তির ঠিক আগে আমি রোজ ফোন করতাম হল মালিকদের। অনুরোধ করতাম, একটা শো দিন। কেউ বলতেন হিন্দি ছবি আছে, কেউ বলতেন দক্ষিণী ছবি। ভালবেসে, পায়ে ধরে যতগুলো শো পেয়েছিলাম, তাতেই ছবিটা রিলিজ করলাম। আজ ৬ সপ্তাহ পর 'টনিক'-এর ধারে কাছে কোনও ছবি নেই। আমি যতদিন বাঁচব, 'টনিক'-এর মুক্তির পিছনের লড়াইটা আমার মনে থাকবে।' এই লড়াইটার পর যখন শুনলেন, 'দেব হলে দর্শক ফিরিয়েছে' কেমন লেগেছিল? এবিপি লাইভের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে লাজুক হেসে ফেললেন দেব (Dev)। 


এক মাস পেরিয়েও হাউজফুল 'টনিক' (Tonic)। রবিবার নন্দনে অনুরাগীদের চমকে দিতে হাজির হয়েছিলেন দেব স্বয়ং। অনুরাগীদের উৎসাহ উদ্দিপনা পেরিয়ে আড্ডা জমিয়েছিলেন এবিপি লাইভের সঙ্গে। করোনা পরিস্থিতি পর যখন ব্যবসা করতে পারছে না একের পর এক বলিউড ছবি, তখন 'টনিক' কী টলিউডে উদাহরণ হয়ে রইল? দেব বলছেন, 'কোনও একটা উদাহরণ বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে বদলে দিতে পারে না। সামনেই 'বাবা, বেবি ও', 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' মুক্তি পাচ্ছে। দর্শকের কাছে আবেদন, তাঁরা এই ছবিগুলোও দেখুক। আমরা যদি ভাবি দর্শক শুধু আমার ছবিই দেখবে আর কোনও ছবি দেখবে না তাহলে কোনোদিন এগিয়ে যেতে পারব না আমরা। চিরকাল অন্য ভাষার ছবি আমাদের ওপর দাপট দেখাবে। আমি সবসময় বিশ্বাস করি টিম ওয়ার্ক ছাড়া বাংলা ছবিকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। যদি ১১টা ছবি একসঙ্গে মুক্তি পায় তাহলে ১১টা ছবিকেই সমানভাবে দর্শকের কাছে তুলে ধরতে হবে। মানুষ হিন্দি ছবি দেখতে যান অভ্যাসে। বাংলা ছবি দেখার অভ্যাসটাও ফিরিয়ে আনতে হবে। যাতে দর্শকদের তালিকায় সবার আগে বাংলা ছবি থাকে তারপর অন্যান্য ছবি। আমি এটাই উদাহরণ হিসেবে সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমার তোমার নয়, সবাইকে একজোট হয়ে বাংলা ছবির হয়ে প্রচার করতে হবে। তবেই আবার স্বর্ণযুগ ফিরবে।'


আরও পড়ুন: একটা শো দিন, 'টনিক' মুক্তির আগে নিজে হল মালিকদের ফোন করে অনুরোধ করতাম


কেবল দর্শকের ভালোবাসা নয়, অন্যান্য পরিচালক থেকে শুরু করে অভিনেতা, অভিনেত্রী, সফল বাংলা ছবির কথা বলতে গিয়ে অনেকেই উদাহরণ হিসেবে 'টনিক' বা 'গোলন্দাজ'-এর নাম করছেন। এটা কী উপরি পাওনা? লাজুক হেসে দেবের উত্তর, 'ভাবতে ভালো লাগে, করোনা পরিস্থিতির পর সফল দুটো বাংলা ছবির সঙ্গেই আমার নাম জড়িয়ে আছে। আমরা সিনেমাহলে দর্শককে ফেরাতে পারলাম। আর হ্যাঁ, অন্য ভাষার ছবির কাছে হার মানলাম না। একটা সময় লড়াইটা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, বাংলা ছবি কে দেখবে? আজ সেই বাংলা ছবিই সিনেমাহল এতদিন খুলিয়ে রেখেছে আর টানা হাউজফুল দিচ্ছে। আমরা বাংলা ছবির দর্শকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই এটার জন্য। বাঙালি হারল না, বাংলা ছবি আবার জিতল।'