সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: হাতে আর মাত্র ১ মাস, তারপরই প্রাণের উৎসবে মেতে উঠবে বাঙালি। কিন্তু কেমন হতো ১০০ বছর আগের দুর্গাপুজো? কেমন ছিল কলকাতার প্রাচীন শারদ-উদযাপন?


কলকাতার পুরনো, পাড়াগুলোর মধ্যে অন্যতম শোভাবাজার। মহানগরের বেড়ে ওঠার সাক্ষী উত্তর কলকাতার বনেদি এই এলাকা। সেই শোভাবাজার মোড়ের কাছেই এমনই পুরোনো দেখতে একটা দোকান। চলতি পথে চোখে পড়তেও পারে, আবার চোখ এড়িয়ে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। তবে একটু ঠাওর করে, ফাইভ সি অরবিন্দ সরণীতে ঢুকে পড়তে পারলে, টাইম মেশিনে পৌঁছে যাবেন প্রায় ১০০ বছর আগের মহানগরে।


সি.bros আপাত ভাবে একটা ফটোগ্রাফির দোকান। যে যুগে স্থাপিত হয়েছিল, তখনও অনেকের ধারণা ছিল ছবি তুললে বুঝি মানুষ মারা যায়। আমতার কুঞ্জবিহারী চট্টোপাধ্যায়ের মাথায় চেপে বসেছিল ফটোগ্রাফির ভূত। সেই ১৯১২ সালে বাগবাজারে খুলে ফেলেন ফটোগ্রাফির দোকান। চট্টোপাধ্যায়ের সি আর সাহেবি কেতায় ব্রাদার্স হল bros। পরে সে দোকান ছেড়ে ১৯১৬ সালে উঠে এলেন বর্তমান ঠিকানায়। একে একে ভাইয়েদের নিয়ে এলেন ফটোগ্রাফির চর্চায়।


আরও পড়ুন: Dakshin Dinajpur: রেশন তুলতে গিয়ে মাথায় ভাঙল শেড, আহত ৮ গ্রাহক


পাশেই কুমোরটুলি। তখন কুমোরপাড়া কাঁপাচ্ছেন গোপেশ্বর পাল। কুমোরটুলি সর্বজনীনের দুর্গা প্রতিমা ১৯৩৮ সালে পুড়ে য়াওয়ার পর, রাতারাতি নতুন ঠাকুর তৈরি হল। কিন্তু সেই প্রতিমা হল আলাদা আলাদা ৫টা। একচালা ভেঙে সেই প্রথম পাঁচ চালার প্রতিমা। সি ব্রসের কর্ণধার সমর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ১৯৩৮-এ তৈরি হলেও তার প্রস্তুতি চলেছিল আগে থেকেই।


গোপেশ্বর পাল বেশিদিন ঠাকুর গড়েননি। তিনি যে ক’বছর এধরণের দুর্গাঠাকুর করেছিলেন তার প্রত্যেকটারই ছবি ধরা আছে সমরবাবুর ঠাকুরদা অনাদিভূষণ চট্টোপাধ্যায়ের ক্যামেরায়। গোপেশ্বর পালের পরে ৫০-এর দশকে সাড়া ফেলে দিলেন আরেক তরুণ শিল্পী রমেশ পাল। ফায়ার ব্রিগেডের ঠাকুর। সমর চট্টোপাধ্যায় জানান, এই প্রথম মানুষের মুখের মতো প্রতিমার মতো মুখ। কুমোরটুলির এমন সব দুর্মূল্য কীর্তি ধরা রয়েছে সি ব্রসের অসংখ্য কাচের স্লাইডে। আপাত নিরীহ এই দোকানে ঢুকলে বোঝাই যায় না। এর খাজানায় জমা হয়ে রয়েছে কলকাতার দুর্গাপুজোর বিবর্তনের একের পর এক মাইল ফলক ছবি।


আরও পড়ুন: Nadia: শান্তিপুরে পঞ্চায়েতে আস্থা ভোট ঘিরে উত্তেজনা, বিজেপিকে সাংসদকে ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূলের