কলকাতা: 'পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন অভিভাবকরাই'। রাজ্যে স্কুল (School Reopen) খোলার প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। এ দিন তিনি জানান, যে অভিভাবক চাইবেন তিনি তাঁর সন্তানকে স্কুলে পাঠাবেন, যে অভিভাবক চাইবেন না তিনি তাঁর সন্তানকে পাঠাবেন না। কোভিড নিয়ে ভীতি থাকতেই পারে। এ বিষয়ে তাঁদের কোনওরকম জোর করবে না সরকার (West Bengal Government)। এক্ষেত্রে পড়ুয়াদে অ্যাটেনডেন্স সংক্রান্ত কোনও সমস্যাও হবে না বলে স্পষ্ট করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু(Education Minister Bratya Basu)।
বৃহস্পতিবার তিনি আরও বলেন, 'আমাদের দফতরে স্কুল স্যানিটাইজেশনের মতো যে সব কোভিড বিধি সংক্রান্ত নির্দেশিকা রয়েছে, তা পালন করা হচ্ছে।'
উল্লেখ্য, স্কুল খোলা নিয়ে যাবতীয় আইনি জট কেটে গিয়েছে। আগামী ১৬ নভেম্বর থেকেই খুলছে স্কুল। রাজ্যের সিদ্ধান্ত বহাল রাখল হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। রাজ্য ২৯ অক্টোবর যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, তা মেনেই স্কুল খুলবে বলে জানিয়ে দিল আদালত। সরাসরি প্রভাবিত হচ্ছেন বলে কোনও শিক্ষক বা পড়ুয়া মনে করলে, তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন বলেই জানিয়েছে হাইকোর্ট।
ঢোকার সময় ধাক্কাধাক্কি এড়াতে স্কুল টাইমের মধ্যেই অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ করা হয়েছে, জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। স্কুল টাইমে ১০ মিনিট করোনা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারও চালানো হবে।
উল্লেখ্য, আদালতের (Kolkata Highcourt) নির্দেশ নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, 'আমরাও চাই স্কুল-কলেজগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে আস্তে আস্তে খুলে যাক'।
কিছুদিন আগেই রাজ্য সরকার (West Bengal Government) জানায় আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল চালু হবে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোমবার হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী সুদীপ ঘোষ চৌধুরী। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, পরিকল্পনা ছাড়াই রাজ্যে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল খোলা হবে। মামলাকারীর মতে, এই পড়ুয়াদের এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনেশন (Vaccination) হয়নি। পরিকল্পনা ছাড়া স্কুল খুললে, ছাত্র-ছাত্রীদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাঁর দাবী ছিল, এই বিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি (Expert Committee) তৈরি করা হোক। সেই কমিটি সময় কমিয়ে কীভাবে স্কুল চালু রাখা যায়, তার সুপারিশ করুক।
তবে সেই আবেদন খারিজ করেছে হাইকোর্ট। আজ মামলার শুনানিতে আদালত জানায়, রাজ্য যেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেই মোতাবেক, নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির জন্য আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুল খুলছে। রাজ্য সরকার স্কুল খোলা নিয়ে ২৯ অক্টোবর যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল তা বহাল রাখল হাইকোর্ট। এই বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের যে মামলা কলকাতা হাইকোর্টে করা হয়েছিল, তাও খারিজ করেছে আদালত।
পাশাপাশি আদালত বলেছে, যিনি মামলা করেছেন তিনি সরাসরি রাজ্যের এই নির্দেশিকায় প্রভাবিত নন। তাহলে কেন এই মামলা কলকাতা হাইকোর্ট গ্রহণ করবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতিরা। নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণি পড়ুয়া বা অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের এই সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে সমস্যা থাকলে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন। সেই মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রাজ্য সরকারের ২৯ অক্টোবরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির জন্য স্কুল খুলবে।