ইম্ফল : অশান্তির শেষ নেই মণিপুরে (Manipur Violence) । আরও তিন জনের প্রাণহানি। কুকি (Kuki) সম্প্রদায়ের তিন জনকে গুলি করে খুন করল সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। মণিপুরের উখরুল জেলার ঘটনা। পুলিশ সূত্রের খবর, জেলা সদর উখরুল শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে কুকি অধ্যুষিত থোওয়াই কুকি গ্রামে আজ ভোররাত সাড়ে ৪টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে । উখরুলের পুলিশ সুপার এন ভাশুম বলেন, "গ্রামের পূর্ব দিকে থাকা পাহাড়ি এলাকা থেকে একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতী এসে আচমকা গুলি চালাতে শুরু করে । তারা গ্রামের প্রহরীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়। যদিও আহতের কোনও খবর নেই।" (Manipur)
ঘটনার পর ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে রাজ্য পুলিশ ও সেনার তরফে ওই এলাকায় যৌথ তল্লাশি অভিযান চলছে। এর আগে গত ৫ অগাস্ট, বিষ্ণপুর ও চূড়াচাঁদপুর জেলায় পৃথক দুটি গুলি চালানোর ঘটনায় মেইতি ও কুকি সম্প্রদায়ের ৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মৃতদের মধ্যে তিন জন মেইতি ও দুই জন কুকি সম্প্রদায়ের ছিল।
গত ৩ মে থেকে টানা হিংসা চলছে এই রাজ্যে। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি হল- মেইতি-অধ্যুষিত বিষ্ণুপুর, ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব ও কাকচিং এবং কুকি-জোমি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর ও কাঙ্গপোকপি এলাকা। জাতিগত হিংসায় বিধ্বস্ত মণিপুরে পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি। গত ৩ মে থেকে এই রাজ্যে কুকি-জো-চিন ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে এই পরিংসংখ্যান। পুলিশি এই ডেটা সম্প্রতি জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
এদিকে হিংসা শুরুর পর থেকে তা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে মণিপুরের অপর এক সম্প্রদায় নাগা। নাগা সম্প্রদায়ের বিধায়ক এবং নাগরিক সমাজ বরাবর বলে এসেছে, এই ইস্যুতে কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হলে আলাপ আলোচনা চালাতে হবে। তাছাড়া কুকি-জোমি অধ্যুষিত অঞ্চলে পৃথক প্রশাসনের ব্যবস্থা হলে যেন নাগা অধ্যুষিত এলাকায় প্রভাব না ফেলে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লালকেল্লা থেকে ভাষণে উঠে আসে মণিপুর হিংসার প্রসঙ্গ। তিনি বলেছিলেন, "গত কয়েক সপ্তাহে মণিপুরে একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। আমাদের মা-বোনদের সম্মানহানি হয়েছে। কিন্তু, সেখানে ধীরে ধীরে শান্তি ফিরছে। মণিপুরের সঙ্গে আছে ভারত।"