নয়াদিল্লি: প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যেই মাটি ভিজেছে বেশ কয়েক বার। তার পর থেকেই বর্ষার অপেক্ষায় দিন গোনা চলছে (Indian Monsoon)। কিন্তু চাতকের মতো বসে থাকাই সার, এ বছর বর্ষা দেরিতে আসবে বলে জানিয়ে দিল আবহাওয়া দফতর (IMD)। মঙ্গলবার ভারতীয় মৌসম বিভাগের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। স্বভাবতই তাতে উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ বর্ষা দেরিতে এলে গ্রীষ্ম আরও দীর্ঘায়িত হবে এবং তার জেরে জ্বালা ধরানো গরম বেশ কিছুদিন ভোগাবে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে (Monsoon Arrival)। 


মঙ্গলবার মৌসম ভবন জানিয়েছে, এ বছর বর্ষা ঢুকতে দেরি হবে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে কেরলে বৃষ্টি শুরু হতে সময় লাগবে। মৌসম ভবনের তরফে বলা হয়, "কেরলে বর্ষা  ঢুকতে ঢুকতে ৪ জুন হয়ে যাবে। চার দিন দেরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে আপাতত।" সাধারণত ১ জুন নাগাদই কেরল উপকূলে বৃষ্টি শুরু হয়। এ বার তাতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। 


তবে বর্ষা দেরিতে ঢুকলেও, বৃষ্টির অনুপাতে তেমব কোনও হেরফের হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। কেরল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপে পর পর দু'দিন  বৃষ্টি হলেই ভারসাম্য ফিরবে বলে দাবি আবহবিদদের। সোমবার IMD-র প্রধান এম মহাপাত্র জানান, সাত দিন পর্যন্ত দেরি হলেও চলতে পারে। এ ক্ষেত্রে চাষের কাজ এবং গোটা দেশের বৃষ্টির উপর তেমন প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই।


আরও পড়ুন: Dust Storm in Delhi: আচমকা ধুলোঝড়ে ঢাকল রাজধানী, একধাক্কায় বিষিয়ে গেল বাতাস, যে কারণে এমন পরিস্থিতি...


মৌসম বিভাগের মতে, বর্ষা সময়ের আগে আসুক অথবা দেরিতে, গোটা দেশে তার প্রভাব পড়বে এমন বলা যায় না। আঞ্চলিক পরিবেশের উপর তা নির্ভর করে। এর আগে, গত ১১ এপ্রিল বলা হয়েছিল যে, এ বছর বর্ষা স্বাভাবিকই হবে। তবে বর্ষার দ্বিতীয়ার্ধে এল নিনো কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহবিদরা। এল নিনোর ফলে পূর্ব এবং প্রশান্ত মহাসাগর উষ্ণ হয়ে ওঠে।  কয়েক বছর অন্তর অন্তরই এমন পরিস্থিতি দেখা দেয়, যার ফলে ফসল নষ্ট হওয়া থেকে, দাবানল এমনকি হড়পা বানেরও আশঙ্কা থাকে। 


আরও পড়ুন: Car Number Plates: লাল-নীল, হলুদ-সবুজ, হরেক রংয়ের সম্ভার, গাড়ির নম্বর প্লেট দেখে বোঝা সম্ভব অনেক কিছুই


সাধারণত কেরল হয়েই জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, চারমাস ব্যাপী বর্ষার আগমন ঘটে দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। ১৫ জুলাইয়ের পর থেকে তা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তার জন্য দক্ষিণ-পশ্চিমে বৃষ্টি নামার অপেক্ষা করে থাকে গোটা দেশ। এ বারে তাই দেরিতে বর্ষা ঢোকার পূর্বাভাসে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। কারণ ভারত এখনও মূলত কৃষি নির্ভর দেশ, যার জন্য বর্ষা অত্যন্ত জরুরি। দেশের বার্ষিক বৃষ্টিপাতের ৭৫ শতাংশই মেলে বর্ষায়। তাই বর্ষা আসতে দেরি হলে, বৃষ্টির পরিমাণে হেরফের হলে কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা।


আবহবিদরা যদিও জানাচ্ছেন, এর তেমনও প্রভাব পড়বে না। তবে গত পাঁচ বছরে হাতেগোনা কয়েক বারই বর্ষার আগমনে হেরফের ঘটেছে। ২০১৮ এবং ২০২২ সালে বর্ষা সময়ের আগেই ঢুকে পড়ে। আবার ২০১৯ এবং ২০২১ সালে কয়েক দিন দেরিতে আগমন ঘটে বর্ষার।