১৯৯০-এই অযোধ্যা সমস্যা মেটাতে চলেছিল চন্দ্রশেখর সরকার, কী হয় তখন, দেখুন
ABP Ananda, Web Desk | 09 Nov 2019 04:01 PM (IST)
হরিবংশ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চন্দ্রশেখর অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ করে হিন্দু-মুসলমান নেতাদের মুখোমুখি বসিয়েছিলেন। চেষ্টা করেছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে যেন শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা মিটিয়ে ফেলেন তাঁরা।
নয়াদিল্লি: অর্ডিন্যান্স এনে অযোধ্যা বিতর্ক মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে চন্দ্রশেখরের নেতৃত্বে গঠিত মিলিজুলি সরকার। রাজ্য সভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ওপর বই লিখেছেন। সেখানে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেটা ১৯৯০। বাবরি মসজিদ ধ্বংস হতে তখনও ২ বছর বাকি। দিল্লির সিংহাসনে তখন আসীন চন্দ্রশেখর, তাঁর সংখ্যালঘু সরকার চলছে রাজীব গাঁধী নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের বাইরে থেকে সমর্থনে। জেডিইউয়ের রাজ্যসভা সাংসদ হরিবংশ তখন ছিলেন অতিরিক্ত তথ্য কমিশনার। তাঁর চন্দ্র শেখর- দ্য লাস্ট আইকন অফ আইডিওলজিক্যাল পলিটিক্স বইতে লিখেছেন, চন্দ্র শেখর অযোধ্যা সমস্যার বরাবরের জন্য সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেন। এ ব্যাপারে তাঁকে সাহায্য করেন উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিংহ যাদব, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শরদ পওয়ার ও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভৈঁরো সিংহ শেখাওয়াত। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও মুসলিম নেতৃত্বের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরির চেষ্টা করেন তাঁরা। চন্দ্রশেখর সরকার এ ব্যাপারে অর্ডিন্যান্স আনতে চেয়েছিল। হরিবংশ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চন্দ্রশেখর অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ করে হিন্দু-মুসলমান নেতাদের মুখোমুখি বসিয়েছিলেন। চেষ্টা করেছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে যেন শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা মিটিয়ে ফেলেন তাঁরা। ভৈঁরো সিংহ শেখাওয়াত তাঁর পুরনো বন্ধু, তাঁর সাহায্য নেন তিনি। পাশাপাশি সাহায্য করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শরদ পওয়ার ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিংহ যাদব। ঠিক হয়, অযোধ্যা বিতর্ক সুপ্রিম কোর্টে যাবে। আদালত যা রায় দেবে তাই গ্রাহ্য হবে। যদি আদালত বলে, তবে মুসলিম নেতারা নাকি মসজিদ স্থানান্তর করা নিয়ে ভাবনাচিন্তাও শুরু করেছিলেন। হরিবংশ আরও বলেছেন, চন্দ্রশেখর ভিএইচপি ও বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটিকে ১৯৯০-এর ডিসেম্বরে দুটি বৈঠকে বসান। সংসদে বৈঠক করান একটি নির্দিষ্ট প্রশ্ন নিয়ে- সত্যিই বাবরি মসজিদ মন্দির ভেঙে গড়ে উঠেছিল কিনা। অযোধ্যার বিতর্কিত কাঠামোর ঐতিহাসিক, পুরাতাত্ত্বিক, আইনগত ও রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে তৈরি করেন ৪ বিশেষজ্ঞের কমিটি। তাঁদের বলা হয় ভিএইচপি ও বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির দেওয়া যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ বিবেচনা করতে। শরদ পাওয়ারের আত্মজীবনী থেকে উল্লেখ করে বইটিতে বলা হয়েছে, চন্দ্রশেখর ভেবেছিলেন, অযোধ্যার বিতর্কিত কাঠামো একটি স্মৃতিসৌধ হিসেবে থাকুক, আর জমিটি বরাদ্দ হোক একটি মন্দির ও একটি মসজিদ গঠনের জন্য। কিন্তু অর্ডিন্যান্স আসছে খবর পেয়ে বাগড়া দেয় বাইরে থেকে সরকারকে সমর্থন করা কংগ্রেস। দলীয় সভাপতি রাজীব গাঁধী ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা নাকি ভয় পেয়ে যান, এমন জটিল সমস্যার সমাধান করে ফেললে চন্দ্রশেখরের ভাবমূর্তি জনগণের মনে সুদৃঢ় হবে, আর তা কোনওভাবেই তাঁদের কাম্য ছিল না। তাঁদের হস্তক্ষেপের জন্যই অযোধ্যা জট তখন খুলতে খুলতেও খোলেনি। এরপর ১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয় করসেবকদের হাতে। অন্যদিকে গড়ায় ইতিহাস।