অযোধ্যা: উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের প্রাক্কালে অযোধ্যায় ফের রাম-মন্দির ইস্যুকে উস্কে দিল বিজেপি।


যে সময় অযোধ্যায় রামায়ণ জাদুঘর নির্মাণ করতে উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্র, ঠিক সেই সময় শাসক দলের বিভিন্ন নেতার মুখে রাম-মন্দির নির্মাণের ডাক অন্য মাত্রা দিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

গেরুয়া-শিবিরের ‘ফায়ার-ব্যান্ড’ নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী মঙ্গলবার সাফ জানিয়ে দিলেন, অযোধ্যায় রাম-মন্দির হওয়া উচিত। এদিন উমা ভারতী বলেন, বিতর্কিত জমি রাম-মন্দিরের।

আরেক বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ারের দাবি, সব রাম ভক্তই চাইছেন দ্রুত রাম-মন্দির তৈরি হোক। তিনি বলেন, যতক্ষণ সেটা না হচ্ছে, আমরা চুপ করে বসে থাকব না। সরকারের নিশ্চিত করা উচিত যে মন্দির তাড়াতাড়ি তৈরি হবে।

প্রসঙ্গত, অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ চত্বরের অদূরে রামায়ণ জাদুঘর নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। সূত্রের খবর, খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে এই বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই মিউজিয়াম নির্মাণের জন্য ২২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র।

আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ হতে চলেছে বিধানসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তার আগে, রামায়ণ মিউজিয়ামের মাধ্যমে রাম-মন্দির ইস্যুকে ফের উস্কে দিতে চাইছে বিজেপি।

এই নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজেপিকে একহাত নিয়েছে মায়াবতীর বিএসপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তাদের অভিযোগ, এত বিপুল খরচ করে ভোটের মুখে স্রেফ ধর্মের শুরশুড়ি দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির।

যদিও, বিজেপি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের দাবি, মিউজিয়াম তৈরি হলে এখানে পর্যটনের উন্নতি হবে। বস্তুত, এদিনই অযোধ্যায় রামায়ণ জাদুঘর নির্মাণ করার জন্য চিহ্নিত জমি ঘুরে দেখেন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী মহেশ শর্মা।

তিনি জানিয়ে দেন, মিউজিয়াম নির্মাণের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। অভিযোগ খারিজ করে মহেশ শর্মার দাবি, জাদুঘর হলে পর্যটনের উন্নয়ন হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন ও পর্যটন হল ভিন্ন বিষয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী চান দেশ সবদিক দিয়ে এগিয়ে চলুক। তিনি চান আমাদের দেশে পর্যটনের উন্নতি হোক। এই পদক্ষেপের ফলে অযোধ্যায় পর্যটন শিল্পের প্রভূত উন্নতি হবে।

প্রসঙ্গত, মিউজিয়াম নির্মাণের জন্য বিতর্কিত রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ চত্বর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে প্রায় ২৫ একর জমি চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। সেখানেই এদিন জমি পর্যবেক্ষণে যান কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী।

এদিন জমি দেখার পর রামায়ণ সার্কিট অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সঙ্গেও এদিন বৈঠক করেন মহেশ। সূত্রের খবর, রামায়ণে উল্লিখিত নেপাল ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে এই অযোধ্যাকে কী করে মেলানো যায়, সেই রূপরেখা তৈরি হয় ওই বৈঠকে।

পাশাপাশি, অযোধ্যা বা চিত্রকূটে আন্তর্জাতিক রামায়ণ সম্মেলনের পরিকল্পানাও তৈরি হয় বৈঠকে। জানা গিয়েছে, ১২টি দেশের প্রতিনিধিরা ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন।