নয়াদিল্লি: বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারের তিন প্রধান প্রতিশ্রুতির অন্যতম অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। এবার সেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে ফের সরব হতে শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। তাঁর বার্তা, ভারতের সংবিধানেও এই বিধি চালুর অঙ্গীকার রয়েছে। শীর্ষ আদালতও তা লাগু করতে বলেছে। আগামী বছর  লোকসভা ভোট যাকে কেন্দ্র করে এর মধ্যেই বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠক হয়েছে পাটনায়। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কথায় অন্য তাৎপর্য পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল।


কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
ভোপালে বুথস্তরের কর্মীদের সঙ্গে সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আজকাল অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কথা বলে বহু মানুষকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এক দেশে কী ভাবে দুটি আইন চলতে পারে? সংবিধান সমানাধিকারের কথা বলে...সুপ্রিম কোর্টও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বলবৎ করার কথা বলেছে। ওরা (বিরোধী) শুধু ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে।' প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিজেপি তোষণের রাজনীতি করে না। এই প্রসঙ্গেই তিন তালাকের কথাও বলেন মোদি। তাঁর মতে, যাঁরা তিন তালাক প্রথার সমর্থনে সওয়াল করেছেন তাঁরা আসলে মুসলিম মহিলাদের সঙ্গে অন্যায় করছেন। এদিন বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগে তীক্ষ্ণ অভিযোগ শানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, 'বিরোধী দলগুলি বিভাজনে বিশ্বাসী, তোষণের রাজনীতি করে বেড়ে উঠতে চায়। আমরা কিন্তু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে নির্দেশিকা দিই না। সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে থাকি।' তবে বিজেপি যে কিছুতেই 'তুষ্টিকরণের' পথে হাঁটবে না, সেটিও বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।  


আক্রমণে বিরোধী জোট...
হালেই চব্বিশের সাধারণ নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিজেপি বিরোধী জোটের তোড়জোড় শুরু করতে পাটনায় জড়ো হয়েছিল, তৃণমূল, কংগ্রেস, আপ-সহ ১৫ টি দল। সেই বৈঠককে আগেই কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন সেই বিরোধী দলগুলির উদ্দেশে মোদির বার্তা, 'যারা বিজেপি বিরোধিতার জন্য একে অন্যের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে, তাদের উপর রাগ নয়, করুণা হয়। ...যারা একসময়ে কংগ্রেসের কট্টর সমালোচনা করত, আজ তারাই কংগ্রেসের সামনে মাথা নত করেছে। ওদের ভাবভঙ্গি থেকেই স্পষ্ট থেকে যে ওরা বুঝেছে, চব্বিশের নির্বাচনে বিজেপি জিতবে। এখন সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ভিত্তিহীন অভিযোগ আনছে ওরা। দুর্নীতি প্রশ্নেও ভোপালের সভা থেকে তৃণমূল-সহ একাধিক বিরোধী দলকে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে সাধারণ নির্বাচনের ঠিক আগের বছর তাঁর মুখে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে সওয়াল আলাদা নজর কেড়েছে। ২০১৯ সালে বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার পর সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দ্বিতীয় মোদি সরকার। এর পর কী? জোরাল হচ্ছে প্রশ্ন।   


আরও পড়ুন:তৃণমূল প্রার্থীর বাড়ি থেকে দেড় কেজি বোমার মশলা 'উদ্ধার', ধৃত প্রার্থীর স্বামী