ঝাঁসি: অপহরণের পর চলন্ত গাড়ির মধ্যে গণধর্ষণের (gangrape) অভিযোগ জানিয়ে দুই ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেলিং করে ফাঁসানো পরিকল্পনা করেছিল এক ১৭ বছরের কিশোরী! কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না। পুলিশের জেরায় নিজের দোষ স্বীকার করল সে। এই ঘটনায় মিথ্যা মামলা দায়ের করার অভিযোগে পকসো আইনের (POCSO Act) ২২ নম্বর ধারায় একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
১৭ বছরের ওই কিশোরীর অভিযোগ ছিল, তিন জন যুবক তাকে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি (Jhansi) শহর থেকে অপহরণ করে চলন্ত গাড়ির মধ্যে ধর্ষণ করার পর তাঁকে হাইওয়ে-তে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। পরে কিশোরীটির পিসি ও বাবা সাংবাদিকদের অভিযোগ করে পুলিশের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে তা দুর্ব্যবহার করার পাশাপাশি ১২ ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রেখে তারপর অভিযোগ দায়ের করে। এই সুযোগে দুই অভিযুক্ত পালিয়ে যায়।
মেয়েটির পিসির লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, ওই কিশোরী ঝাঁসি শহরের প্রেম নগর পুলিশ স্টেশনের অন্তর্গত একটি এলাকার বাসিন্দা। গত মঙ্গলবার সকালে সে যখন রাস্তায় বেরিয়েছিল তখন সনু কুমার নামে এক যুবক তার দুই সঙ্গীর সাহায্যে ওই কিশোরীকে গাড়িতে তুলে গণধর্ষণ করে। তারপর ১৫ কিলোমিটার দূরে শিবপুরী এলাকার রাজ্য সড়কে ফেলে পালিয়ে যায়। এরপর মেয়েটি বহুকষ্টে ৫ কিলোমিটার দূরে তার পিসির বাড়িতে গিয়ে সব কথা খুলে বলে। তার ভিত্তিতেই দায়ের হয় মামলা।
তদন্তে নেমে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে জেরা করতেই বেরিয়ে আসে আসল সত্য। এপ্রসঙ্গে ঝাঁসির এসএসপি রাজের এস বলেন,"একটি পরিবারের তরফে গণধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এরপরই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে। তদন্তে জানা যায়, গণধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই কিশোরী অভিযোগ জানিয়েছিল যে দুজন ব্যক্তি তাকে একটি সাদা গাড়িতে করে অপহরণ করেছিল। কিন্তু, পুলিশ ওই মেয়েটির বাড়ির আশপাশে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে। তাতে কোনও সাদা গাড়ি চোখে পড়েনি এবং ওই কিশোরীকে একা দেখা গেছিল। এরপর ঘটনাস্থলে থাকা আরও ৫০-৬০টি সিসিটিভির ফুটেজ চেক করা হয়। তাতে দেখা যায়, কিশোরী সারা শহর করে একটি দুর্গের মধ্যে প্রবেশ করে। পরে জেরায় কিশোরীটি স্বীকার করেছে যে ধর্ষণের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। দুই ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলার জন্য এই পরিকল্পনা করেছিল। এই কাজে তাকে সাহায্য করেছিল ওই কিশোরীর পিসি ও তার ছেলে। ওই কিশোরী একটি ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এর জন্য সে গয়নাও কিনে ছিল। কিন্তু, বহুক্ষণ ঝাঁসির দুর্গের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার পরেও তার প্রেমিক আর আসেনি। তাই মেয়েটি বাধ্য হয়ে নিজের পিসির বাড়িতে ফিরে যায়। মিথ্যা মামলা করে পুলিশকে হেনস্থা করার জেরে ওই কিশোরীর নামে পকসো আইনের ২২ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।