অর্ণব মুখোপাধ্য়ায়, পুরী, ওড়িশা: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের (Puri Jagannath Temple) রত্নভাণ্ডার খোলার ব্য়াপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ওড়িশা সরকারের (Odisa) গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির আগামী মঙ্গলবারের বৈঠকে। শনিবার নব গঠিত কমিটির প্রথম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই দিন রত্নভাণ্ডারের চাবি নিয়ে আসা হবে। চাবি দিয়ে না খুললে তালা ভাঙা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


কী রয়েছে রত্নভাণ্ডারে? কী বললেন পুরীর মহারাজা গজপতি দিব্য়সিংহ দেব?


জগন্নাথ দেবের (Jagannath Dev) যত অলঙ্কার রয়েছে, মূল্যবান যত বস্তু রয়েছে সবই রয়েছে রত্নভাণ্ডারে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে গর্ভগৃহের কাছেই রয়েছে এই রত্ন ভাণ্ডার। পুরীর মহারাজা জানাচ্ছেন এই রত্ন ভাণ্ডারের দুটি ভাগ রয়েছে। একটি হল বাহির-ভাণ্ডার, অন্যটি ভিতর-ভাণ্ডার।


এর মধ্যে বাহির-ভাণ্ডার মাঝেমধ্যেই খোলা হয়। এখানে ভিন্ন ভিন্ন পুজো, অনুষ্ঠানে জগন্নাথ দেবের সাজের যা সামগ্রী প্রয়োজন সেগুলি থাকে। কিন্তু ভিতর-ভাণ্ডার প্রায় খোলা হয়ই না বলে জানাচ্ছেন পুরীর মহারাজা। তিনি জানালেন,  গয়না, মূল্যবান বস্তু, যা সাধারণত ব্য়বহার হয় না বা কখনও ব্যবহার হয়নি-সেগুলি এখানেই থাকে। মেরামতির কারণে বা কখনও বিশেষ কোনও কারণে ওটা খোলা হয়। পুরীর মহারাজা গজপতি দিব্য়সিংহ দেব জানাচ্ছেন, পুরীর জগন্নাথ দেবের রঘুনাথ বেশ এবং আরও যা বেশ রয়েছে তার জন্য় যে বহুমূল্য গয়না প্রয়োজন সেগুলি ভিতর ভাণ্ডারে থাকে।


আরও একটি তথ্য এবিপি আনন্দকে জানিয়েছেন পুরীর বর্তমান মহারাজা। তিনি জানালেন, পুরীর মহারাজরা যখন যুদ্ধে যেতেন, রাজ্য বিস্তারে যেতেন, তখন যে যে রাজ্য তারা অধিকার করতেন। সেই রাজ্যের রাজার মুকুট এনে জগন্নাথ দেবের চরণে রাখতেন তাঁরা। ফলে সেই সব মুকুট ভিতর ভাণ্ডারে রয়ে গিয়েছে। এছাড়াও আরও মুকুট এবং আরও গয়না রয়েছে ওই ভিতর ভাণ্ডারে।


লোকসভা ভোটের প্রচারে এই রত্নভান্ডারের কথা শোনা গেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে। এই আবহেই ওড়িশা হাইকোর্টের নির্দেশে বিজেপি সরকারের গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির প্রথম বৈঠকে শনিবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, আগামী মঙ্গলবারের বৈঠকে আনা হবে রত্নভাণ্ডারের চাবি।  যদি দেখা যায় চাবি দিয়ে খোলা সম্ভব হচ্ছে না তাহলে ভাঙা হবে রত্নভাণ্ডারের তালা। ঠিক কবে খুলবে রত্নভাণ্ডারের দরজা, মঙ্গলবার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ১৯৭৮ সালে শেষবার অডিট হয়েছিল পুরীর মন্দিরের রত্নভাণ্ডারের। ক্ষমতায় এসেই পুরীর মন্দিরের রত্নভাণ্ডারের অডিট করার সিদ্ধান্ত নেয় ওড়িশার বিজেপি সরকার। আগের বিজেডি সরকারের তৈরি ১২ সদস্য়ের কমিটি ভেঙে দিয়ে, ওড়িশা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বিশ্বনাথ রথের নেতৃত্বে ১৬ সদস্য়ের নতুন কমিটি তৈরি করা হয়। উল্টো রথের আগে রত্নভাণ্ডার খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নবগঠিত কমিটি।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: বিহারে জন্ম, ৩৩ বছর বয়সেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য কণিষ্ক! কেমন ছিল উত্থান?