কলকাতা: রাশিয়া দাবি করেছে, বিশ্বের প্রথম করোনা টিকা বার করেছে তারা। এই টিকা এক সঙ্গে তৈরি করেছে গামেলেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, কোনও অজানা অসুখের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন সম্পূর্ণ নিরাপদ টিকা বার করতে কম সে কম ২ বছর লাগার কথা। সেখানে রাশিয়া এই টিকা বার করে ফেলেছে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে। যদিও এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল থেকে পাওয়া নথি ও অন্যান্য তথ্য বিশেষজ্ঞরা এখনও পরীক্ষা করছেন।

আরও পড়ুন: বিশ্বের প্রথম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ঘোষণা রাশিয়ার, প্রথম টিকা নিলেন পুতিন-কন্যা

এই পরীক্ষার ফল হাতে আসার আগেই রুশ সরকার অবশ্য বলে দিয়েছিল, ১২ অগাস্ট টিকা রেজিস্টার করবে তারা। দেখা গেল, তার একদিন আগেই তারা টিকা নথিভুক্তিকরণ করে ফেলল।

দুটি প্রতিষ্ঠানে হয়েছে এই টিকার পরীক্ষা। এগুলি হল, বুরডেঙ্কো মেইন মিলিটারি ক্লিনিক্যাল হসপিটাল ও সেকেনভ ফার্স্ট মস্কো স্টেট মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি। ১৮ জুন শুরু হয় ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, তাতে যোগ দেন মাত্র ৩৮ জন স্বেচ্ছাসেবী। টিকা নেওয়ার পর তাঁদের সকলের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মায় বলে দাবি করেছে রুশ প্রশাসন। ১৫ জুলাই ছেড়ে দেওয়া হয় এঁদের, আর এক দল স্বেচ্ছাসেবীর ওপর দ্বিতীয় দফার পরীক্ষা শুরু হয় ২০ তারিখ। গামেলেয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টারের ডিরেক্টর আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ বলেছেন, অ্যাডিনোভাইরাসের ওপর ভিত্তি করে তাঁরা এক ধরনের নির্জীব কণা দিয়ে এই টিকা তৈরি করেছেন। এর ফলে মানুষের শরীরের কোনও ক্ষতি হবে না বলে তাঁর দাবি।

রাশিয়ার এই টিকা হল সাধারণ ঠাণ্ডা লাগার সার্স-কোভিড-২ টাইপ অ্যাডিনোভাইরাসের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া এক ভেক্টর ভ্যাকসিন। রুশ বৈজ্ঞানিকরা করোনাভাইরাসের জেনেটিক মেটেরিয়াল এই বিপত্তিহীন ক্যারিয়ার ভাইরাসে এমবেড করেছেন। এর ফলে মানব শরীরে অল্প অল্প রোগ জীবাণু ঢুকিয়ে দেখা হয়েছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে কিনা। গিন্টসবার্গের কথায়, করোনার কণা অত্যন্ত শারীরিক অস্বস্তি তৈরি করতে পারে কারণ কোনও বাইরের অ্যান্টিজেন শরীরে প্রবেশ করানো হলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালরকম বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে অনেকের জ্বরও আসতে পারে। টিকা পরীক্ষার সময় স্বেচ্ছাসেবীদের শরীরের তাপমাত্রা ৩৭-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে গিয়েছিল বলে তিনি জানিয়েছেন।প্যারাসিটামল খেলেই এ ধরনের সমস্যা মিটে যাবে বলে তাঁর দাবি।