মস্কো: রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপাচ্ছে পশ্চিমের দেশগুলি। সুইফট ব্যাঙ্কিং সিস্টেম থেকে রাশিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ইংলিশ চ্যানেলে রাশিয়ার একটি পণ্যবাহী জাহাজকেও আটকানো হয়েছে ফ্রান্সের তরফে। এছাড়াও রাশিয়ার জন্য আকাশসীমা বন্ধের পথেও হেঁটেছে একাধিক দেশ। এবার ইউরোপ-সহ পশ্চিমের দেশগুলির বিরুদ্ধে নজিরবিহীন আক্রমণ শানালেন খোদ ভ্লাদিমির পুতিন।
পশ্চিমের দেশগুলিকে এম্পায়ার অফ লাই (empire of lies) বা মিথ্যের সাম্রাজ্য বললেন পুতিন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জন্যই এই মন্তব্য বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সূত্রের খবর, সোমবার রাশিয়ার প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন পুতিন। আলোচনার মূল বিষয় ছিল দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা। পুতিনের সঙ্গে হওয়া ওই মিটিংয়ের একটি অনুলিপি (transcript) প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই বিষয়টি জানা গিয়েছে।
রাশিয়া ইউক্রেনের দ্বন্দ্ব বহুদিনের। দীর্ঘদিন ধরেই দুই দেশের মধ্যে চড়ছিল উত্তেজনার পারদ। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের দক্ষিণে ক্রিমিয়া দ্বীপ দখল করে রাশিয়া। তারপর থেকে বারবার সংঘাতের আবহ তৈরি হলেও এভাবে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি হয়নি। ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ ইউক্রেনের উপরে বিপুল সৈন্যবাহিনী নিয়ে আক্রমণ করে রাশিয়া। তারপর থেকেই নড়েচড়ে বসে আন্তর্জাতিক মহল। আপাতত আলোচনা শুরু হলেও যুদ্ধ থামানোর কোনও লক্ষ্মণ মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের আবহ তৈরি করেনি আমেরিকা ও তার সহযোগী দেশগুলি। সেনা না পাঠালেও দফায় দফায় বহু পরিমাণ আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে ইউক্রেনের হাতে। তুলনায় কম সেনাবাহিনী নিয়েও আপাতত প্রবল লড়াই চালাচ্ছে ইউক্রেন। অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করার পাশাপাশি রাশিয়াকে আর্থিকভাবে দুর্বল করার চেষ্টাও শুরু হয়েছে। সেই কারণেই একাধিক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে রাশিয়ার উপর। সেই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাশিয়ার একাধিক ব্যবসা। বিভিন্ন রাশিয়ার সংস্থার তাদের আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত লেনদেনে ধাক্কা খাচ্ছে। যার ফলে চাপ তৈরি হচ্ছে রাশিয়ার কোষাগারেও। রাশিয়ার আয়ের একটি বড় উৎস তেল ও গ্যাস রফতানি থেকে আসে। আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোয় সেই আয়েও ধাক্কা লেগেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার ফলেই পুতিনের এই ক্ষোভ কিনা সেই প্রশ্নও উঠেছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধে 'ক্লাস্টার', মানবাধিকার সংস্থার নিশানায় রাশিয়া