নয়াদিল্লি: আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বলে কথা। যতদূর চোখ যায় সবকিছু পরিপাটি, ঝাঁ চকচকে।  এমন বিমানবন্দরের রানওয়ের উপর সমাধি দেখলে ভিরমি খাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু রানওয়ের উপর থাকা সমাধি দু'টির উপর দিয়েই দিব্যি ছুটে একের পর এক বিমান। আজ বলে নয়, বিগত কয়েক দশক ধরেই এমনটা চলে আসছে সাভানা হিলটন হেড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। প্রতি বছর কয়েক হাজার বিমান ওঠানামা করে সেখানে। (Graves Under Runway)


আমেরিকার জর্জিয়া প্রদেশের সাভানায় অবস্থিত হিলটন হেড বিমানবন্দর। মূলত বাণিজ্যিক এবং সামরিক বিমান ওঠানামা করে সেখানে। আর ওই বিমানবন্দরের রানওয়েতেই পাশাপাশি দু'টি সমাধি রয়েছে। সিমেন্টের মেঝের উপর পাথর বসানো রয়েছে, তাতে লেখা রয়েছে মৃতদের নাম-ধামও। কিন্তু বিমানবন্দরের রানওয়ের উপর সমাধি কেন? এর নেপথ্যে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। ( Savannah Hilton Head Airport)


জর্জিয়ায় ওই বিমানবন্দরটি যে জায়গায় গড়ে উঠেছে, সেটির আসল মালিক ক্যাথরিন এবং রিচার্ড ডটসন। দীর্ঘ ৫০ বছরের দাম্পত্যজীবনে ওই জমির উপরই চাষাবাদ করতেন ক্যাথরিন এবং রিচার্ড।  ক্যাথরিন এবং রিচার্ড, দু'জনের জন্ম ১৭৭৯ সালে। ১৮৭৭ সালে মারা যান ক্যাথরিন, তার সাত বছর পর রিচার্ডও মারা যান। পারিবারিক জমিতেই সমাধিস্থ করা হয় তাঁদের। পরে সেই জায়গায় গড়ে ওঠে বিমানবন্দর।


আরও পড়ুন: Modi Meloni Selfie : 'হ্যালো ফ্রম মেলোডি টিম', মোদির সঙ্গে খোস-মেজাজে ভিডিও পোস্ট মেলোনির, মুহূর্তে ভাইরাল


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন একেবারে দোরগোড়ায়, সেই সময় জর্জিয়ায় জরুরি ভিত্তিতে একটি বিমানবন্দরের প্রয়োজন পড়ে আমেরিকার সেনাবাহিনীর। বোমারু বিমান B-24 লিবারেটর এবং B-17 ফ্লাইং ফোর্ট্রেস মজুতের জন্যই মূলত জায়গার প্রয়োজন পড়ে। সেই সময় ক্যাথরিন এবং রিচার্ডের ওই জমিটিই পছন্দ হয় সেনার। কিন্তু সমস্যা বাধে গোড়াতেই। ওই জমিতে প্রায় ১০০ সমাধি ছিল। পরিবারের লোকজন এবং পরিচারক, ক্রীতদাসদের মৃতদেহ বরাবর ওই জমিতেই সমাধিস্ত করা হতো। 


বাকি সব সমাধি যদিও বা তুলে ফেলা যেত, ক্যাথরিন এবং রিচার্ডের সমাধে তুলে ফেলায় আপত্তি জানায় তাঁদের পরিবারের লোকজন এবং আত্মীয়স্বজনরা। ওই জমিকে ঘিরেই ক্যাথরিন এবং রিচার্ডের জীবন আবর্তিত হতো এবং ওই জমিতেই তাঁরা থাকতে চাইবেন বলে দাবি করেন পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনরা। উপায় না দেখে সমাধিক্ষেত্রের উপরেই বিমাবন্দর তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ক্যাথরিন এবং রিচার্ডের সমাধি দুটিতে হাত না দিয়েই, সেগুলিকে ঘিরে রানওয়ে গড়ে তোলা হয়। রানওয়ের নীচে যে সমাধিগুলি রয়েছে, সেগুলির প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রতীকচিহ্নও বসানো রয়েছে। ডটসন পরিবারের আরও দুই সদস্য, ড্যানিয়েল এবং জনের দেহও সমাধিস্থ রয়েছে ওই বিমানবন্দরে।