কলকাতা: পুণ্যভূমি অযোধ্যার মাটিতে বহু বহু প্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের উদ্বোধন সম্পূর্ণ হল আজ। সম্পন্ন হয়েছে রামলালার (Ram Mandir) প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠান। সারা দেশজুড়ে এক উৎসবের আমেজ যেন। রাম মন্দিরকে ঘিরে জনজোয়ার অযোধ্যার রাস্তায় রাস্তায়। আর যে রামলালার মূর্তিকে ঘিরে এতকিছু, সেই মূর্তি যিনি বানিয়েছেন তাঁর হৃদয়ে আজ আবেগের ধারা। দীর্ঘদিন সাধুর মত জীবন কাটিয়েছেন তিনি। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন মূর্তির কারিগর অরুণ যোগীরাজ (Arun Yogiraj)। নিজেকে পৃথিবীর সবথেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন তিনি। কে এই অরুণ যোগীরাজ, চেনেন ?
মাইসোরের ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ (Arun Yogiraj) নিজে হাতে তৈরি করেছেন অযোধ্যার রামলালার মূর্তি। তিনি মনে করেন প্রভু রামই তাঁকে এই কাজের জন্য বেছে নিয়েছেন। প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সমাধা হওয়ার পরে অরুণ জানান, 'আমাদের জীবনে শত বাধা-বিপত্তি, ঝড়-ঝাপটার মধ্যেও প্রভু রামই আমাদের যেন ঢালের মত রক্ষা করে এসেছেন, এ আমার একান্ত বিশ্বাস। আর আমি এটাও বিশ্বাস করি যে তিনিই আমাকে এই কাজের জন্য বেছে নিয়েছেন।' রামলালার মূর্তি নির্মাণের মধ্যে দিয়ে প্রভূত প্রশংসিত হয়েছেন অরুণ, সম্মানিতও হয়েছেন।
মাইসোরের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ পাশ করেছেন অরুণ (Arun Yogiraj)। একটি বেসরকারি সংস্থায় এইচআর বিভাগে ৬ মাস কাজও করেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর মনে টেকেনি। নিজের অন্তরের কথা শুনে সেই চাকরি ছেড়ে তাঁর পারিবারিক পেশা হিসেবে মূর্তি গড়ার কাজেই মনোনিবেশ করেন অরুণ যোগীরাজ। এর আগে আরও বেশ কিছু মূর্তি গড়েছেন তিনি। ১২ ফুটের আদি শঙ্করাচার্যের মূর্তি, দিল্লির ইন্দিরা গেটে স্থাপিত নেতাজির মূর্তিও তাঁরই বানানো, ২১ ফুটের হনুমানের মূর্তি, ১৫ ফুট লম্বা ড. বি আর আম্বেদকরের মূর্তি এসবই তাঁর বানানো।
বাবার থেকে মূর্তি তৈরির কলাকৌশল শিখেছেন অরুণ। তাঁর বিশ্বাস এই বিশেষ দিনে তিনি জীবিত থাকলে অরুণের এই সম্মান দেখে খুবই তৃপ্তি পেতেন, অরুণ যে কাজ করেছেন তা জানতে পেরে খুবই আনন্দ পেতেন তাঁর বাবা, বিশ্বাস করেন অরুণ নিজে। তাঁর কথায়, 'রামলালার মূর্তি তৈরির সময় আমার রাতে ঘুম হত না। কীভাবে নিখুঁত মূর্তি তৈরি করা যায় আমি সেই চেষ্টাই করতাম। আমার কাছে এই কাজ অত্যন্ত মূল্যবান আর আজ আমি নিজেকে সবথেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছি।'
রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার (Ram Mandir) দিন আমন্ত্রিত ছিলেন অরুণ যোগীরাজ এবং তাঁর স্ত্রীও উপস্থিতি ছিলেন এই বিশেষ দিনে। তাঁর স্ত্রী বিজেতা জানান, একজন প্রকৃত সাধুর মতই জীবন কাটিয়েছেন অরুণ। মূর্তি তৈরির সময় টানা ৬ মাস তিনি কেবল সাত্ত্বিক ভোজনেই সীমাবদ্ধ ছিলেন। উপবাস করতেন নিয়মিত। অরুণের বানানো এই রামলালার মূর্তিই নাকি তাঁর স্ত্রীর কাছে পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর মূর্তি। কীভাবে এত প্রাচীন একটি শিলাখণ্ডের উপর এই মূর্তি গড়ে তুললেন অরুণ, তা সত্যিই এক বিস্ময়।
আরও পড়ুন: Ram Mandir in Odisha: অযোধ্যার মতো প্রচার পেল না, একই দিনে দেশে উদ্বোধন হল দ্বিতীয় রামমন্দিরের