কলম্বো: বেঁচে নেই (dead) এলটিটিই-র প্রাক্তন (LTTE chief) প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ (Prabhakaran), সমস্ত অনুমান পত্রপাট খারিজ করে দাবি শ্রীলঙ্কার সেনার (Sri Lanka Army)। সোমবার টিএনএম নেতা, প্রভাকরণের বেঁচে থাকা নিয়ে যে নতুন দাবি করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন (Baseless Speculation), জানিয়ে দিল দ্বীপরাষ্ট্রের বাহিনী। তাদের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার রবি হেরাথের বরং পাল্টা দাবি, প্রভাকরণ যে মৃত তা প্রমাণ করার জন্য ডিএনএ সার্টিফিকেট-সহ যাবতীয় তথ্য় তাঁদের কাছে রয়েছে।


কী বলছে শ্রীলঙ্কার সেনা?
ব্রিগেডিয়ার রবি হেরাথের কথায়, 'যে ব্যক্তির কথা বলা হচ্ছে, সে যে জীবিত তার কোনও প্রমাণ নেই। সুতরাং যেই রাজনীতিবিদ এমন দাবি করছেন তাঁর কাছেই জানতে চাওয়া উচিত এমন বিবৃতির ভিত্তি ঠিক কী?' তা হলে কি ২০০৯ সালেই মারা গিয়েছেন 'লিবারেশন অফ তামিল টাইগার্স এলম' বা এলটিটিই-প্রধান? শ্রীলঙ্কার সেনা মুখপাত্রের নিঃসঙ্কোচ উত্তর, 'আলবাৎ। সেই সময় ডিএনএ শংসাপত্র-সহ বাকি সব তথ্যপ্রমাণও নেওয়া হয়েছিল।' কিন্তু হঠাৎ এমন দাবি শোনা গেলে কী করবে সে দেশের সরকার? কোনও পদক্ষেপের কথা ভাববে? সেনা মুখপাত্রের দাবি, এখনও সেরকম কিছু ভাবা হয়নি। তবে সম্ভব শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রী খুব শীঘ্র এই নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে পারেন। আপাতত তাদের বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী আলি সাবরি জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। 


কেন বিতর্ক?
টিএনএম নেতা নেদুমারান সোমবার তাঞ্জাভুরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বহাল তবিয়তে রয়েছে প্রভাকরণ। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও রাখে সে। কিন্তু এই মুহূর্তে কোথায়? সেই ব্যাপারে মুখে কুলুপ বর্ষীয়ান টিএনএম নেতার। যদিও এটি জানিয়ে দিলেন, সোমবার 'তামিল টাইগার্স' -র প্রাক্তন প্রধানকে নিয়ে তিনি যে এই বোমা ফাটাবেন তা প্রভাকরণের পরিবারের অজানা নয়। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, প্রভাকরণের আত্মীয়দের অনুমোদন নিয়েই সোমবার সবটা জানিয়েছেন তিনি। 

হঠাৎ প্রকাশ্যে কেন?
এককথায় শ্রীলঙ্কার বর্তমান অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। এটিই প্রভাকরণের 'অন্তরাল' ভেঙে সামনে আসার আদর্শ সময়, জানিয়েছেন বর্ষীয়ান নেদুমারান। তবে কখন কী ভাবে সে প্রকাশ্যে আসবে, সেটা স্পষ্ট নয়। যদিও একটি বিষয় নিয়ে ধন্দ নেই বর্ষীয়ান নেতার। 'তামিল এলম' তৈরির ব্যাপারে বিশদ পরিকল্পনা তৈরি প্রভাকরণের। ইতিহাস বলছে, ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার সেনা যখন 'এথনিক ওয়ার'-র চূড়ান্ত পর্যায়ে, তখনই এলটিটিই প্রধানের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়। শ্রীলঙ্কার হাজার হাজার তামিল বাসিন্দার হত্যার অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধেরর মামলা করতে চেয়েছিল বহু রাজনৈতিক দল। সেই ঘটনাপ্রবাহের পর ভারত মহাসাগর, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে বহু ঢেউ উঠেছে। দ্বীপরাষ্ট্রের রাজনীতি ও অর্থনীতি ব্যাপক ওঠানামার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ফের উত্তাল শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে প্রভাকরণের বেঁচে থাকার খবর শুনে শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন এমপি শিবজিলিঙ্গমের টিপ্পনি, যে দেহ পাওয়া গিয়েছিল সেটি যে প্রভাকরণের তা শ্রীলঙ্কার সরকার চিহ্নিত করতে পারেনি। তবে কি তার বেঁচে থাকার জল্পনায় প্রাক্তন এমপিও সিলমোহর দিচ্ছেন? উত্তর নেই, আপাতত অপেক্ষা সময়ের। যদিও প্রভাকরণের বেঁচে থাকার দাবি নস্যাৎ করল শ্রীলঙ্কার সেনা। 


আরও পড়ুন:মৃত মায়ের দেহ পড়ে ঘরে, 'নির্বিকার মেয়ে', দুর্ঘন্ধে ঘটনা প্রকাশ্যে