সিমলা: গত কয়েকদিনের তুমুল বৃষ্টিতে যেন লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যটা (Himachal Pradesh Natural Disaster)। মারা গিয়েছেন ৭০ জনেরও বেশি। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে হিমাচল প্রদেশের সরকার, গোটা রাজ্যকেই 'প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিধ্বস্ত' (Natural Calamity Affected Area) এলাকা বলে ঘোষণা করল। শুক্রবার এই মর্মে সরকারি বিবৃতি পেশ করেছে সুখবিন্দর সিংহ সুখখু-এর প্রশাসন।


কী বলা হয়েছে?
মুষলধারে বৃষ্টি, হড়পা বান, মেঘভাঙা বিপর্যয়, ভূমিধস-সব মিলিয়ে প্রকৃতির রোষ যেন থামছেই না উত্তর ভারতের এই রাজ্যে। সেই সব নজরে রেখেই শুক্রবার বিবৃতি পেশ করেছে হিমাচল প্রদেশ প্রশাসন। তাতে জানানো হয়েছে, 'এই বর্ষায় র্অভূতপূর্ব প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে হিমাচল প্রদেশ। গোটা রাজ্যেই তুমুল বৃষ্টির জেরে হড়পা বান, মেঘভাঙা বিপর্যয়, ভূমিধসের কবলে পড়েছে। সাধারণ মানুষের প্রাণ ও সম্পত্তির উপর ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছে।' সরকারি তরফে আরও দাবি, হাজারো হাজারো বাসস্থান তছনছ হয়ে গিয়েছে। বিপুল পরিমাণ শস্য ও খেত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনা, সেনা, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ, হোমগার্ড, দমকলকর্মী এবং স্থানীয় ভলান্টিয়ারদের সাহায্য়ে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করতে হয়েছে। জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে রাজ্য, জেলা এবং স্থানীয় স্তরে রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বহু সেতু হয় ধুয়েমুছে সাফ বা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই বিপর্যয়ের জেরে গোটা রাজ্যকে এমন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে যাতে কিনা দৈনিক জীবনযাপন ধাক্কা খেয়েছে, জানিয়েছে রাজ্য সরকার। পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে গোটা রাজ্যকেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত এলাকা বলে ঘোষণা করেছে সরকার। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার পর উদ্ধারকাজ পুরোদমে শুরু হলে ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান আরও স্পষ্ট হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে পরিস্থিতি যে ভয়ঙ্কর সেটা মোটামুটি বুঝিয়ে দিয়েছে সুখবিন্দর সিংহ সুখখু।

কী ছবি?
গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অবিরাম বৃষ্টি হয়ে চলেছে হিমাচল প্রদেশে। তাতে কার্যত ওলটপালট হয়ে গিয়েছে গোটা রাজ্য। ধসে চাপা পড়ে, বাড়ি ভেঙে পড়ে, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বুধবার পর্যন্ত ৭১ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছিল। এখনও পর্যন্ত ১৩ জন নিখোঁজ বলে জানা যাচ্ছে। দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে ৫৭ জনের। তবে এখই এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি নেই বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ আগামী কয়েক দিনও হিমাচলে বিক্ষিপ্ত এবং ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সবমিলিয়ে এ বছরই ভারী বর্ষণে হিমাচলে এখনও পর্যন্ত ২১৪ জন মারা গিয়েছেন। খোঁজ মেলেনি ৩৮ জনের। জুন মাসের শেষ দিক থেকে গত ৫৪ দিনে ৭৪২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে হিমাচলে। অন্যান্য বছর ১ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সাধারণত ৭৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। গত ৫০ বছরে রাজ্যে এত বৃষ্টি হয়নি। 


আরও পড়ুন:হয়তো আপনার নামেই ব্যাঙ্কে জমে মোটা টাকা! এবার এক ক্লিকেই খোঁজ