Cyclone Yaas Update: আমফানে শিক্ষা, ইয়াসের দুর্ঘটনা এড়াতে চেন দিয়ে বেঁধে রাখা ট্রেনের বগি

কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় তওতের দাপটে কর্ণাটক উপকূলে বার্জ উল্টে মৃত্যু হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক যুবকের।

Continues below advertisement

পূর্ব মেদিনাপুরে প্রতি ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৫৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার। দুর্ঘটনা এড়াতে, বিভিন্ন জায়গায় লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হচ্ছে ট্রেন, জাহাজ। ভরদুপুরেই যেন সন্ধে। কালো মেঘে ঢাকা আকাশ। সমুদ্র অস্থির। বিপদের হাতছানি। 

Continues below advertisement

আমফানে একাধিক ক্ষতি হয়েছিল। তাই এবার আগেভাগেই সতর্কতা। ঝড়ের দাপটে রেললাইন থেকে ট্রেন গড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রেলের বগি অন্য লাইনে উঠে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই একাধিক ব্যবস্থা নিচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। লাইনে স্কিড দেওয়া হয়েছে, এতে চাকা গড়িয়ে যাবে না। পাশাপাশি রয়েছে ম্যানুয়াল গার্ডও। হাওয়ার বেগ বাড়লে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই জানানো হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের তরফে। 

কোনও প্রাণহানি যাতে না হয় সেই কারণেই ঝড়ের আগে এই ব্যবস্থা। ঝড়ের তীব্রতা বাড়লে আইসোলেশন করা হবে বলেও জানিয়েছেন রেল আধিকারিক। কী এই আইসোলেশন। রেল আধিকারিক জানান, একটি লাইন অন্যলাইনের সঙ্গে সেট করে দেওয়া হয়, যাতে গাড়ি ঝড়ের দাপটে রোল করতে না পারে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে সমস্ত কাজ। দুর্ঘটনা এড়াতে গার্ডের কোচে হ্যান্ড পাওয়ার ব্রেকও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শালিমার রেল ইয়ার্ডে দেখা গেল এই ছবি। 

পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ো আসছো ইয়াস। বঙ্গোপসাগরে উদ্ভূত নিম্নচাপ পরিণত হয়েছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে। ক্রমশ তা ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলিতে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ পৌঁছতে পারে ৭০-৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টায়।

স্বাভাবিকভাবেই ভয় বাড়ছে সাধারণ মানুষের। ঝড়ের ঝাপটা সামাল দিতে, ক্ষয়ক্ষতি যতটা সম্ভব এড়াতে  জল-স্থল সর্বত্র পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আয়োজন করা হচ্ছে। জাহাজ - লঞ্চ দড়ি দিয়ে বাধা, রেলের চাকায় লোহার বেড়ি। এদিন বাবুঘাট, বাজেকদম তলা ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, লঞ্চ, ট্রলার, পুলিশের স্পিড বোট, স্টিমার এবং প্রমোদ তরী-গুলি মোটা মোটা কাছি দিয়ে রেলিংয়ের সঙ্গে বাধা।

ইয়াসের আগমনের প্রভাব পড়েছে ট্রেন পরিষেবাতেও। বেশ কিছু ট্রেন বাতিল। এর পাশাপাশি কারশেড বা বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা বগিগুলো পাছে ঝড়ের দাপটে এদিক-ওদিক ছিটকে না যায়, সে জন্য মোটা শিকল দিয়ে ট্রেন বেধে রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, আমফানের সময়ে ঝড়ের দাপটে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল, এবার সেই ঘটনা এড়াতে চায় রেল। 

১৯৬৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর, রামেশ্বরম সাইক্লোনের দাপটে উল্টে গিয়েছিল পামবন-ধনুষকোডি প্যাসেঞ্জার ট্রেন। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ২০০ জনের। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে তাই সতর্কতা নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, ইয়াসের আগাম সতর্কতায় ইতিমধ্যেই দূরপাল্লার একাধিক ট্রেন বাতিল হয়েছে। 

 
কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় তওতের দাপটে কর্ণাটক উপকূলে বার্জ উল্টে মৃত্যু হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক যুবকের। আরেক যুবকের খোঁজ নেই। মুম্বই উপকূলেও বড় বিপদের মুখোমুখি হয় যাত্রীবাহী একটি বার্জ। কোনওক্রমে উদ্ধার করা হয় যাত্রীদের।

তাই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আছড়ে পড়ার আগেই নদী ও সমুদ্রপথে জলযানগুলির সুরক্ষার বন্দোবস্ত করেছে প্রশাসন। হলদিয়া বন্দরে থাকা জাহাজগুলিকে কাছি ও অতিরিক্ত নোঙর দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে।

লোডিং ও আনলোডিংয়ের জন্য থাকা ক্রেনগুলি যাতে ভেঙে না পড়ে, সেজন্য বেধে রাখা হয়েছে কাছি দিয়ে। এ ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় নৌকা ও জলযানের সুরক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola