ঝিলম করঞ্জাই, সন্দীপ সরকার, কলকাতা: দু-সপ্তাহে কলকাতায় (Kolkata) করোনা সংক্রমণের (Coronavirus) হার ৫ দশমিক তিন আট শতাংশ। কেন্দ্রের এই তথ্য নিয়েই তুঙ্গে তরজা। পর্যাপ্ত টেস্ট হচ্ছে না বলেই এই অবস্থা। মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের। কলকাতা ভাল অবস্থায় থাকলেও, তা অন্যভাবে দেখানো হচ্ছে। অভিযোগ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের (Trinamool Congress)।


দু’দিন পর রাজ্যে ৬০০-র নীচে নামল করোনায় দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। রবিবার সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৫৮৩। এ নিয়ে রাজ্যে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৬ লক্ষ ২৩ হাজার ১৯১ জন। রবিবারের  বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে করোনায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৫৪৮ জন। যা শনিবারের থেকে ১৪ জন কম।


তবে সম্প্রতি বিদেশ ফেরত, সন্দেহভাজন দুই ওমিক্রন আক্রান্তের খবরে উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্যবাসীর। এই প্রেক্ষাপটে বিতর্ক দেখা দিয়েছেন, শনিবার রাজ্যকে পাঠানো কেন্দ্রের এই অ্যানেক্সার ঘিরে। যেখানে ১০টি রাজ্যের ২৭টি জেলার, করোনা সংক্রণের হার তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কলকাতার নামও। কেন্দ্রের এই পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, গত ২ সপ্তাহে কলকাতায় করোনা টেস্ট হয়েছে ২৮ হাজার ৫৩৮ জনের। 


আরও পড়ুন, এবার কেরলেও ওমিক্রন আক্রান্তের সন্ধান, দেশে মোট সংক্রমিত বেড়ে ৩৮


যার মধ্যে RTPCR টেস্ট হয়েছে ৮০ শতাংশের বেশি মানুষের। যার রিপোর্টের ভিত্তিতে কলকাতায় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার ৫ দশমিক তিন আট শতাংশ। আর এই পরিসংখ্যান নিয়েই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেস ডক্টরস এর সদস্য উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের কাছে খবর আছে, যত টেস্ট হচ্ছে, তাদের মধ্যে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেনের ফলাফল জানানো হচ্ছে না। বিভিন্ন জেলার ল্যাবগুলি বলে দেওয়া হচ্ছে হোম কালেকশন করে টেস্ট না করতে। আরও খবর পাচ্ছি, প্রাইভেট ল্যাবে জেলায় জেলায় বলে দেওয়া হচ্ছে নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি নমুনা সংগ্রহ না করতে। ফলে টেস্ট হচ্ছে না, এটা যদি ঠিকভাবে হত, তাহলে মেনে নিতাম সংক্রমণ হচ্ছে না।" 


যদিও তৃণমূল সাংসদ ও সাধারণ সম্পাদক শান্তনু সেন বলেন, "মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি, আর তখন যদি মাসির সঙ্গে বৈমাতৃ সুলভ....যখন ২ পার্সেন্ট ছিল, তখন ভোট করিয়ে ৩০ শতাংশ বাড়িয়েছে, এখন যখন কলকাতা সেরা জায়গায়, তখন বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে..."। 


আরও পড়ুন, ওমিক্রন আবহে রাজ্যে বাড়ছে করোনা, মুখ্যসচিবকে চিঠি কেন্দ্রের


অন্যদিকে নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। তার ওপর আগের ডেল্টা প্রজাতি নিয়ে এখনও নিশ্চিন্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অর্পিত সাহা বলেন, "ডেল্টা আছে এখনও, মারাও যেতে পারে। সতর্ক থাকতে হবে। যথেষ্ট আক্রান্ত হচ্ছে।" ডেল্টার বিরুদ্ধে লড়াই চলছে, তার মধ্যে নতুন বিপদ হয়ে হাজির ওমিক্রন। এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি করে করোনা বিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।