কলকাতা: মোট লোকাল ট্রেনের মধ্যে চলবে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। আবার যাত্রীও উঠবেন মোট আসন সংখ্যার অর্ধেক।  নবান্নে সোমবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে এভাবেই লোকাল ট্রেন চালুর প্রস্তাব দিয়েছে রেল। সূত্রের দাবি, রাজ্য সরকার চায় সকাল-সন্ধে মিলিয়ে শিয়ালদা ও হাওড়ায় ২১০টি লোকাল ট্রেন চালানো হোক। এটা সম্ভব বলে মনে করছে রেল।


বুধবার রেলকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন স্বরাষ্ট্রসচিব। লোকাল ট্রেনের সময়সূচি নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক হওয়ার কথা। সূত্রের দাবি, লোকাল ট্রেন চালু হলে, অধিকাংশই যে গ্যালোপিং হবে, তা কার্যত নিশ্চিত।



অতিমারীর আগে কোন স্টেশনে কতটা ভিড়ের চাপ ছিল, তা নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই স্টেশনগুলির গুরুত্ব নির্ধারণ করা হবে।এবং সেই হিসেব অনুযায়ী, লোকাল ট্রেনের একটি সম্ভাব্য টাইম টেবিল তৈরি করা হবে।

তবে এখানে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। গ্যালোপিং ট্রেন চললে এক স্টেশনের যাত্রী অন্য স্টেশনে ভিড় করবেন না, তার কী নিশ্চয়তা?

রেলকর্মীদের জন্য নির্ধারিত স্টাফ স্পেশালেই যাত্রীরা কীভাবে হুড়মুড়িয়ে উঠছেন, সোমবার সেই ছবি তুলে ধরেছিলাম আমরা।

এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে, লোকাল ট্রেনের সংখ্যা কমলে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কোন কৌশলে? লোকাল ট্রেনে দূরত্ববিধিই বা বজায় রাখা হবে কীকরে?

রেলবোর্ডের প্রাক্তন সদস্য সমর ঝা বলছেন, ট্রেনে ভিড় কমাতে প্রতি কামরার একটি করে দরজা খোলা রাখা উচিত। পিপিই পরে যদি আরপিএফ স্টাফ থাকে এবং কতজন যাত্রী উঠবে তা তিনিই নিয়ন্ত্রণ করবেন।

লোকাল ট্রেনে শুরুর স্টেশন থেকেই সব আসন ভর্তি হয়ে গেলে, পরের স্টেশনের যাত্রীরা ওঠার সুযোগ পাবেন কীকরে? সেই প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে।

সমর ঝা বলেছেন, এক্ষেত্রে নজরদারির ব্যবস্থা রাখা উচিত।

প্রাক-করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতায় লোকাল ট্রেনে দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা ছিল ৩৫ লক্ষের মতো। শিয়ালদার সব শাখা মিলিয়ে মোট স্টেশন ২০৩।

আর আরপিএফ পোস্ট ২০টি। জিআরপি থানা ১৪টি। হাওড়া ডিভিশনে লোকাল ট্রেনের স্টেশন ১৯৩টি। আর আরপিএফ পোস্ট এবং জিআরপি থানা ২১টি এবং ১৩টি।

এই লোকবল ও পরিকাঠামো নিয়ে নিয়ে ভিড় কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে? সেটাও বড় প্রশ্ন। মঙ্গলবার রেলকে একটি নোট পাঠিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, রাজ্য সবরকম সহযোগিতা করবে।

আরপিএফ, জিআরপি এবং রাজ্য পুলিশের মধ্যে স্টেশন ভাগ করে দায়িত্ব দিয়ে কি ভিড় নিয়ন্ত্রণ সম্ভব? তা ভেবে দেখা হচ্ছে। রেল সূত্রে দাবি, ভিড় ঠেকাতে স্টেশনের সব টিকিট কাউন্টার খোলা রাখা হতে পারে। পাশাপাশি ই-টিকিট পরিষেবা নিয়েও মানুষকে উৎসাহিত করা হবে।