কলকাতা: মুঠো মুঠো নম্বরের জেরে কলেজে ভর্তি সঙ্কটে আজব তথ্য সামনে আনল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। করোনা আবহে বাইরে না গিয়ে রাজ্যেই সবাই পড়াশোনা করছেন। তাই এই সঙ্কট। ব্যাখ্যা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষ সংসদের সভাপতির। মানতে নারাজ শিক্ষামহলের একাংশ।

উচ্চমাধ্যমিকে এবার নম্বরের ফোয়ারা। পরিস্থিতি এমনই যে, ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়েও পছন্দসই কলেজে সিট পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই বলছেন, এই বেনজির ভর্তি সঙ্কটের নেপথ্যে রয়েছে ঝুড়ি ঝুড়ি নম্বর। যা মেনে নিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রীও। এর মধ্যে এবার নতুন তত্ত্ব সামনে আনল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস বলেছেন, ‘সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা রাজ্যে পড়াশোনা করছেন। পুরো রাশটা ভাল কলেজে পড়ছে, বাকিরা আইটিআইতে যাক। ভোকেশনালে আছে, রাজ্য সরকার কী করতে এসব তৈরি করছে। যেহেতু ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি, আর্থিক মন্দা চলছে। করোনার ভয়, তাই ১০০ ভাগ ছাত্র-ছাত্রীই রাজ্যে পড়াশোনা করছে।’

যদিও শিক্ষামহলের একাংশ রাজ্যের এই তত্ত্ব মানতে নারাজ। জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেন পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন প্রায় এরাজ্যে ৩৭ হাজার পড়ুয়া। নিটে আবেদন করেছিলেন প্রায় ৭৮ হাজার। তারপরও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কী করে একথা বলে? প্রশ্ন উঠছে। শিক্ষাবিদ বিকাশ সিংহ বলছেন, ‘এটা কোনও কথা হল? এখানে অতিমারীর কোনও কারণ নেই, আসলে বলে দেওয়া হয়েছিল বাড়িয়ে বাড়িয়ে নম্বর দাও, এখন বেশি নম্বর পাওয়ার পর একথা বলছে। আর আস্তে আস্তে তো সব খুলে যাচ্ছে, পড়তে তো যাচ্ছে, সব অবাস্তব কথা।’ শিক্ষামহলের একাংশ মনে করছেন, কলেজে ভর্তি সঙ্কটের মূল কারণই হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন ব্যবস্থা। যে ফর্মুলায় নম্বরের দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে দিল্লি বোর্ড পর্যন্ত।

অ্যাসোসিয়েশন অফ স্কুলস ফর দ্য আইএসসি-র সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক নবারুণ দে বলছেন, ‘১০০ শতাংশ বাইরে যাচ্ছে এমনটা নয়, কম যাচ্ছে। তবে উচ্চমাধ্যমিকে যেভাবে নম্বরের ভাঁড়ার ভরে গিয়েছে, আমাদের ক্ষেত্রে অনেক ক্যালকুলেশন করে নম্বর দেওয়া হয়েছে, উচ্চমাধ্যমিকে সেটা হয়নি। ওখানে ম্যাক্সিমামটা দেওয়া হচ্ছে।’ যদিও সংসদের দাবি, বিজ্ঞানসম্মত উপায়েই পরীক্ষা এবং ফলপ্রকাশ হয়েছে।

মহুয়া দাস বলেছেন, ‘আমরা আমাদের ফর্মুলা মতো পরীক্ষা করেছি। ফেলে রাখতে তো পারি না। শেষ দিকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরীক্ষা নিয়েছি, ৮০-৯০ এমনিই পেত, ২০ বেশি পেয়েছে, গড়ে নম্বর দিলে তো বলতে পারত আরও বেশি নম্বর পেতাম।’ রাজ্যের কলেজে প্রথম বর্ষে যত আসন রয়েছে, উচ্চমাধ্যমিকে পাস করেছেন তার থেকে বেশি। সরকারি সূত্রে দাবি, রাজ্যে ৫১৫টি কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে আসন রয়েছে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার। কিন্তু শুধু উচ্চমাধ্যমিকে পাস করেছেন ৬ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৭ জন। উচ্চমাধ্যমিকে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন গতবারের তুলনায় ৪ গুণ বেশি পড়ুয়া।

৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৯৬৬ জন পড়ুয়া। অনেকে বলছেন, এই ঝুড়ি ঝুড়ি নম্বরই ভর্তি সঙ্কটের অন্যতম কারণ। যদিও, অন্য যুক্তি সংসদ সভাপতির।

Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI