নয়াদিল্লি: শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন আচমকা বিপত্তি। লোকসভায় তাণ্ডব চালালেন দুই যুবক। ভিজিটর্স গ্য়ালারি থেকে স্মোক ক্যানিস্টার্স নিয়ে লাফিয়ে পড়েন তাঁরা। তার পর, হলুদ রংয়ের গ্যাস ছুড়তে ছুড়তে এদিক ওদিক দৌড়তে থাকেন। সাংসদদের ডেস্ক টপকে স্পিকারের আসনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা। সংসদভবন হামলার ২২ পূর্তির দিন এই ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, সংসদভবনের বাইরে থেকেও এক মহিলা এবং পুরুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকেও স্মোক ক্যানিস্টার্স এবং কিছু সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। (Lok Sabha Security Breach)


লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন এই ঘটনায় তাজ্জব সাংসদরাও। নিরাপত্তার বেড়াজাল ডিঙিয়ে স্মোক ক্যানিস্টার্স নিয়ে ওই যুবক লোকসভায় ঢুকলেন কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে তাণ্ডব চালানোর পর ওই যুবককে কাবু করে ফেলেন সংসদের নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু সামগ্রীও উদ্ধার হয়েছে। জানা গিয়েছে, জুতোর ভিতর স্মোক ক্যানিস্টার্স লুকিয়ে লোকসভায় ঢোকেন ওই দুই যুবক। (Security Breach Lok Sabha)


ওই দুই যুবকের মধ্যে সাগর শর্মা নামের একজনের কাছ থেকে ভিজিটর্স পাস উদ্ধার হয়েছে, যা বিজেপি-র মহীশূরের সাংসদ প্রতাপ সিনহার অফিস থেকে ইস্যু করা হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি সাংসদের অফিস থেকে পাস পেলেও, পাঁচ ধাপের নিরাপত্তা বলয় পেরোতে হয় সংসদভবনে ঢোকার ক্ষেত্রে। সেখানেই বড় ধরনের গলদ ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে সংসদভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। আর এক যুবককে মহীশূরের বাসিন্দা, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার মনোরঞ্জন ডি বলে শণাক্ত করা গিয়েছে।



আরও পড়ুন: গ্যালারি থেকে আচমকা লাফ, নিরাপত্তার বেড়া ডিঙিয়ে স্প্রে বিশেষ গ্যাসও, অধিবেশন চলাকালীনই লোকসভায় হুলস্থুল কাণ্ড


সংসদভবনে ঢোকার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার কয়েকটি ধাপ পেরোতে হয়। প্রথমে সংসদভবন চত্বরের মূল প্রবেশ পথে তল্লাশি নেওয়া হয়। তার পর মেটাল ডিটেক্টর দিয়েও তল্লাশি চলে। মূল ভবনে ঢোকার মুখেও একদফা তল্লাশি চলে। এর পর করিডরেও অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখান দিয়েই ভিজিটর্স গ্যালারি পৌঁছতে হয়। 


সাংসদ ছাড়া বাইরের লোকজনের মোবাইল ফোন নিয়েও সংসদের ভিতরে ঢোকার অনুমতি নেই। তার পরও ওই দুই যুবক কী করে স্মোক ক্যানিস্টার্স জুতোর মধ্যে লুকিয়ে ভিতরে ঢুকলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। লোকসভার বাইরে থেকে যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের আনমোল এবং নীলম হিসেবে শনাক্ত করা গিয়েছে। দিল্লি পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। কী উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা ভিতরে ঢোকেন, তা এখনও জানা যায়নি।


২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সংসদভবনে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা এবং জইশ-ই-মহম্মদ। সেই হামলায় ন'জনের মৃত্যু হয়। নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে মারা যায় পাঁচ জঙ্গিও। সেই ঘটনার ২২ বছর পূর্তির দিনই লোকসভার নিরাপত্তায় এই বড় ধরনের গলদ সামনে এল।