নয়াদিল্লি: জম্মু ও কাশ্মীরের শীর্ষ পুলিশকর্তা দেবেন্দ্র সিংহের বিরুদ্ধে ওঠা জঙ্গি যোগসাজশের অভিযোগ নিয়ে ট্যুইট করে আরএসএসের ট্রোলবাহিনীকে কটাক্ষ অধীর চৌধুরির। ১১ জানুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের সোপিয়ানে জাতীয় সড়কে কয়েকজন হিজবুল মুজাহিদিন সন্ত্রাসবাদীর সঙ্গে একই গাড়িতে যাওয়ার সময় গ্রেফতার হন তিনি। জঙ্গিদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। অধীর ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিএসপি) দেবেন্দ্রর গ্রেফতারির প্রতিক্রিয়ায় দাবি করেছেন, গত বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হামলায় ৪০ সিআরপিএফ জওয়ান হত্যার নতুন করে তদন্ত করা হোক। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা ট্যুইট করেছেন, দেবেন্দ্র সিংহ না হয়ে উনি ‘দেবেন্দ্র খান’ হলে ‘আরএসএসের ট্রোল রেজিমেন্ট’ ঝাঁপিয়ে পড়ত। গায়ের রং, জাত, ধর্ম নির্বিশেষে দেশের শত্রুদের নিন্দা হওয়া উচিত।


পুলওয়ামা হামলার আসল অপরাধী কারা, প্রশ্ন তুলে অধীর লেখেন, উপত্যকায় বাহিনীতে গলদ থাকা, সর্ষের মধ্যেই ভূত থাকার বিষয়টা ফাঁস হয়ে আমাদের বিরাট অস্বস্তিতে ফেলেছে। আমরা কোনও ব্যাপারে বিচক্ষণ, আবার কোনও ক্ষেত্রে বোকামো দেখাতে পারি না। এবার অবশ্যই প্রশ্ন উঠবে ভয়াবহ পুলওয়ামা হামলার আসল অপরাধীরা কারা। বিষয়টি নতুন করে খতিয়ে দেখা উচিত।





পাল্টা বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন, পুলওয়ামা সন্ত্রাসের পিছনে কারা, তা নিয়ে তাঁদের কোনও সংশয়, সন্দেহ থাকলে কংগ্রেস নেতারা ক্যামেরার সামনে এসে বলুন। আমাদের সেনাবাহিনী বা গোয়েন্দা এজেন্সির ওপর সন্দেহ থাকলে, পাকিস্তান পুলওয়ামা ঘটায়নি বলে মনে করলে সামনে এসে বলুন। তারপরই তিনি বলেন, সার্জিক্যাল হামলা হলে ওরা সেনার বক্তব্য, এমনকী প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিও বিশ্বাস করতে চায় না। প্রমাণ দেখতে চায়। এগুলি আশ্চর্য সমাপতন বলা যায়। তিনদিন আগে অধীর চৌধুরি সেনাপ্রধানকে বিদ্রূপ করে বললেন, কথা না বলে কাজ করুন! আরেকদিকে পাকিস্তানকে তাঁর দল ক্লিনচিট দিচ্ছে। কেন?
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সময় সংসদে অধীরের প্রশ্ন তোলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সম্বিত বলেন, এই অধীর চৌধুরি ৩৭০ বাতিলের সময় সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানকে জিজ্ঞাসা করেছেন?’ ‘রাষ্ট্রপুঞ্জকে জিজ্ঞাসা করেছেন?’ এটা তো দ্বিপাক্ষিক ব্যাপার।‘ কেন ওঁরা পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন? রাহুল গাঁধীকেও আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, কেন রাহুল পাকিস্তানের সহযোগীর মতো আচরণ করছেন, এটাই আমাদের প্রশ্ন। পাকিস্তান রাষ্ট্রপুঞ্জে যে ডসিয়ার দিয়েছিল, তার ওপরের দিকে রাহুলের নাম ছিল। খুব দুঃখের সঙ্গে বলছি, হতে পারি আমরা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, কিন্তু কংগ্রেস যে আচরণ করছে, সেটা রাজনৈতিক বিরোধীসুলভ নয়, কোনও বৃহত্তর চক্রান্তের গন্ধ আছে তাতে।
এদিকে কয়েকটি মিডিয়ায় বেরনো খবর খন্ডন করে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ ব্যাখ্যা দিল, দেবেন্দ্রকে কোনও সাহসিকতা, শৌর্য্যের খেতাব দিয়ে সম্মানিত করেনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কর্মরত অবস্থায় তিনি ২০১৮-য় স্বাধীনতা দিবসে একমাত্র শৌর্য্য মেডেলটি পেয়েছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন থেকে।