আমস্টারডম: বহির্বিশ্বে প্রাণের অনুসন্ধানে বড়সড় সাফল্য! এই প্রথম আমাদের সৌরজগতের বাইরে থেকে বহির্বিশ্বের সম্ভাব্য রেডিও সংকেত ধরতে পারলেন। যে বহির্বিশ্ব থেকে ওই সংকেত এসেছে, তা ৫১ আলোকবর্ষ দূরে।
নেদারল্যান্ডে লো ফ্রিকোয়েন্সি অ্যারে ( এলওএফএআর) রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে  আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই প্রথম এ ধরনের সংকেত আবিষ্কার করেছেন। টাওবুটেস সৌরমণ্ডল থেকে এই সংকেত এসেছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। ওই সৌরমণ্ডলে বৃহস্পতির মতো বড়বড় বেশ কয়েকটি গ্যাসীয় বহির্বিশ্ব রয়েছে। কিন্তু সেগুলি তাদের সূর্যের খুব কাছাকাছি।
জার্নাল অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এ প্রকাশিত গবেষণায় গবেষকরা ওই বহির্বিশ্ব সিস্টেম থেকে রেডিও সংকেতের যথেষ্ট প্রমাণ পেয়েছেন। ওই রেডিও সংকেত বিশ্বের চৌম্বক ক্ষেত্রে একটি অভিনব সম্ভাবনার তৈরি করেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ওই রেডিও সংকেট ওই গ্রহ থেকেই আসছে।
কর্নেলের পোস্ট ডক্টরাল গবেষক জ্যাক ডি টার্নার বলেছেন, আমরা রেডিও ক্ষেত্রে প্রথম বহির্বিশ্বের সংকেতের ইঙ্গিত পেয়েছি। তিনি বলেছেন, ওই সংকেত এসেছে তাউবুটেস সিস্টেম থেকে, যা দ্বৈত নক্ষত্র মণ্ডল ও একটি বহির্বিশ্ব নিয়ে গঠিত। ওই গ্রহ থেকেই সংকেত এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।


পরবর্তী পর্যবেক্ষণেও এই সংকেত ধরা পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। গবেষকরা বলেছেন, ওই চিহ্নিতকরণ বহির্বিশ্ব সম্পর্কে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিল এবং বহু আলোকবর্ষ দূরে থাকা ভিনগ্রহীদের বিশ্ব সম্পর্কে পরীক্ষানিরীক্ষার নতুন  পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছে। টার্নার বলেছেন, বহির্বিশ্বের চৌম্বকক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কোনও গ্রহের অভ্যন্তর ও বায়ুমন্ডলীয় বৈশিষ্ট্যে বুঝতে সহায়তা করে। সেইসঙ্গে তা নক্ষত্র ও গ্রহের সম্পর্কের পদার্থবিজ্ঞান সম্পর্কেও সহায়ক।
বিশ্বের চৌম্বক ক্ষেত্র সৌরঝড়ের বিপদ থেকে রক্ষা করে এবং বিশ্বকে বসবাসের উপযোগী রাখে। টার্নার বলেছেন, বিশ্বের মতো বহির্বিশ্বগুলির চৌম্বকক্ষেত্রও তাদের সৌর ঝড় ও মহাজাগতিক রশ্মিগুলি থেকে তাদের বায়ুমণ্ডলকে সুরক্ষিত রেখে সেখানে বসবাসের উপযোগিতা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও হয়ত অবদান রাখতে পারে।