মস্কো: সাময়িক হলেও, অবশেষে শান্তির ঘোষণা। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাময়িক ইতি টানার সিদ্ধান্ত রাশিয়ার (Russia Ukraine War)। যুদ্ধবিরতির (Russia Announces Ceasefire) ঘোষণা করল তারা, যাতে আটকে থাকা নাগরিকরা নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারেন। শনিবার সকালে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করা হয়। মানবিক স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। মানবিক করিডর গড়ে দেওয়া হবে জন সাধারণের জন্য, যাতে নিরাপদে তাঁরা বেরিয়ে যেতে পারেন। এতে ইউক্রেন সরকারও সম্মত হয়েছে।


আপাতত স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বহাল থাকবে যুদ্ধবিরতি।  বেলা ১১টায় সাধারণ নাগরিকদের উদ্ধারকার্য শুরু হবে বলে ঠিক হয়েছে। মারিউপোলে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার এবং ভলনোভাখায় ২১ হাজার মানুষ পানীয় জল, বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বিচ্ছিন্ন। তাঁদের নিরাপদে বার করে আনা হবে বলে জানা গিয়েছে।


শনিবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, "৫ মার্চ মস্কোর স্থানীয় সময় অনুযায়ী ভোর ৫টায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। মারিউপুল, ভলনোভাখা থেকে নাগরিকরা যাতে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারেন তার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত। বেরনোর জন্য সকলকে মানবিক করিডর গড়ে দেওয়া হবে।"


গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সেনা অভিযানের ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের মাটিকে বোড়ে বানিয়ে ন্যাটো এবং আমেরিকাকে কোনও ভাবেই রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে দেবেন না বলে জানান তিনি। সেই থেকে বিগত ১০ দিন ধরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছে ইউক্রেনে। তাতে এখনও পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে বলে আশঙ্কা। অন্য দিকে, রাশিয়ার তরফেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল। 


যুদ্ধ থামাতে এখনও পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে দু'পক্ষের মধ্যেই। কিন্তু সমাধানসূত্র বেরোয়নি। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়ার বিরোধী রাশিয়া। সেখানে ন্যাটো এবং আমেরিকার সামরিক কাজকর্মেও তীব্র আপত্তি তাদের। আবার ইউক্রেনও মাথা নোয়াতে নারাজ। তাই যুদ্ধে সম্পূর্ণ ভাবে ইতি পড়বে কবে, তা এখনও অনিশ্চিত। তবে মানুষের স্বার্থে আপাতত যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


আরও পড়ুন: Russia Ukraine War: সমকক্ষ না হয়েও কড়া টক্কর প্রতিপক্ষকে, রাশিয়া-বধে ইউক্রেনের অস্ত্র 'জ্যাভলিন'


এ দিন সকালেই যদিও বন্দর শহর মারিউপোল দখল করে রাশিয়া। বন্ধ করে দেওয়া হয় সেখানকার বিদ্যুৎসংযোগ, খাদ্য এবং জল সরবরাহ। সমস্ত যান চলাচল, শীতে ঘরে ঘরে উষ্ণতা বজায় রাখার প্রযুক্তিতেও রাশ টানা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লেনিনগ্রাদে নাৎসি বাহিনী ঠিক এমনই আচরণ করেছিল, তাই তাদের সঙ্গে রাশিয়ার তুলনা টানতে শুরু করেন অনেকেই।


তবে মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বয়শেঙ্কো বলেন, "আপাতত মানবিক সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা। মারিউপোলকে এই বদ্ধ অবস্থা থেকে বার করে আনতে হবে।"


এর আগে, ভারতের তরফে রাশিয়া, ইউক্রেন দুই দেশকে যুদ্ধবিরতির আর্জি জানানো হয়েছিল। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানান, এখনও খারকিভে ৩০০, সুমিতে ৭০০ ভারতীয় আটকে রয়েছেন। তাই সকলের নিরাপত্তায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার প্রয়োজন বলে জানা তিনি।