নয়াদিল্লি: মহাশূন্যে প্রাণের খোঁজে অনুসন্ধান জারি। পৃথিবীতে জায়গা না ধরায়, মানব সভ্যতার একাংশকে চাঁদ অথবা মঙ্গলে চালান করে দেওয়ার পরিকল্পনাও চলছে। তবে সেই স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখার আগে, আরও একটি অসাধ্য সাধন করে ফেললেন বিজ্ঞানীরা। চাঁদের মাটিতে এই প্রথম (Lunar Soil) বীজ পুঁতে চারাগাছ তৈরি করতে সফল হলেন তাঁরা।


অসাধ্য সাধন করলেন বিজ্ঞানীরা


আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) এই অসাধ্য সাধন করেছে। ১২মে গবেষণার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তারা। তাতে জানানো হয়েছে, যে মাটিতে বীজ বপন করা হয়েছিল, তা ১৯৬৮ এবং ১৯৭২ সালে চাঁদ থেকে সংগ্রহ করে আনা হয়েছিল। সেই মাটিতেই বীজ থেকে চারা গজিয়েছে।


নাসা জানিয়েছে, এই গবেষণার জন্য আরাবিডপসিস থালিয়ানা নামের একটি গাছ বেছে নেওয়া হয়। ইউরেশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশে ক্ষুদ্র ফুল বিশিষ্ট এই গাছ খানিকটা সরষের গোত্রে পড়ে। আদতে সেটি এক প্রজাতির গাঁজা বলেই গন্য হয়। রাস্তার ধারে, পরিত্যক্ত জমিতে গজিয়ে ওঠে। চাঁদ থেকে সংগ্রহ করে আনা পাথুরে জমিতে তার বীজ থেকে চারা গজিয়ে উঠেছে।



আরও পড়ুন: https://bengali.abplive.com/news/india/to-control-price-hike-india-bans-export-of-wheat-abroad-888543/amp


কচিপাতা-সহ মাথা তুলে দাঁড়ানো ওই চারাগাছগুলির বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। তাতে দেখা গিয়েছে, পেনের ঢাকনার মতো দেখতে খোপ খোপ ছাঁচের মধ্যে এক চিমটি নস্যিতুল্য মাটির উপর মথা তুলে রয়েছে চারাগুলি। নাসা জানিয়েছে, অ্যাপোলো-১১, ১২ এবং ১৭-র চন্দ্রাভিযানের সময় চাঁদের মাটি নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করে আনা হয়েছিল।


নাসা জানিয়েছে, প্রত্যেক গাছের জন্য এক গ্রামেরও কম মাটি ব্যবহার করেন তাদের বিজ্ঞানীরা। মাটি প্রথমে জলে ভিজিয়ে, তার পর বসানো হয় বীজ। এর পর একটি পরিষ্কার ঘরের ট্রে-তে বসিয়ে রাখা হয়। নিয়মিত তাতে যোগ করা হয় নিউট্রিয়েন্ট সলিউশন। তাতে দু’দিনের মধ্যেই অঙ্কুর বার হতে শুরু করে। ছ’দিন পর বোঝা যায়, তুলনামূলক ভাবে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে চারাগুলি।


চাঁদে উপনিবেশ গড়ার পথ আরও সহজতর হল!


২০ দিন পর চারাগুলিতে ফুল ধরতে শুরু করলে ধীরে ধীরে ছাঁচ থেকে বার করে চারাগুলিকে মাটিতে বসানো হয়। তার পর শুরু হয় আরএনএ পরীক্ষা। তা তবে লবণাক্ত, ধাতব মাটিতে বেড়ে ওঠার সমস্ত দুর্বলতা চারাগুলির মধ্যে লক্ষ্যণীয় ছিল। তবে এই গবেষণা অনেকদূর যেতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, আগামী দিনে চাঁদে মানব সভ্যতা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হলে, সেখানে চাষবাস এবং বাগান গড়ে তোলাও সম্ভব হবে।