ইসলামাবাদ: নতুন দায়িত্বে এসেই নুয়ে পড়া অর্থীনতিকে চাঙ্গা করতে নেমে পড়েছেন তিনি। সরকারি কর্মীদের ছুটিছাটায় কাটছাঁট করে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। একধাক্কায় বাডি়য়ে দিয়েছেন কাজের সময়ও। অর্থনৈতিক দুর্দশা থেকে দেশকে বার করে আনতে এ বার আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (IMF) সঙ্গ নতুন করে আলোচনার প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন পাকিস্তানের (Pakistan Economy) নয়া প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। মন্ত্রিসভা গঠন করার আগেই আলোচনা শুরু করে দিতে চান তিনি।


পাকিস্তানের অর্থনীতির হাল ফেরাতে উদ্যোগী শাহবাজ


অর্থনৈতিক সঙ্কটে থেকে দেশকে বার করে আনতে এর আগে আইএমএফ-এর দ্বারস্থ হয়েছিল ইমরান খান (Imran Khan) সরকারও। কিন্তু মাঝপথে ভেস্তে গিয়েছিল সেই আলোচনা। তার পর পাকিস্তানে সরকারই বদলে গিয়েছে। এই মুহূর্তে প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর আগে অর্থনৈতিক দুরাবস্থা কাটিয়ে ওঠাই মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের নবগঠিত সরকারের। আইএমএফ-এর কাছ থেকে তারা ১০০ কোটি ডলারের বেলআউট প্যাকেজ দাবি করা হতে পারে বলে খবর।


ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শীঘ্রই সেই নিয়ে আলোচনা শুরু হতে চলেছে দু’পক্ষের মধ্যে। তাতে শাহবাজ ছাড়াও পাকিস্তান সরকারের শীর্ষ আধিকারিকরা অংশ নেবেন। অর্থনৈতিক সাহায্যের পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি, ঋণ সংক্রান্ত নিষ্কৃতী এবং নতুন শর্তাবলী নিয়েও আলোচনা হবে দু’পক্ষের মধ্যে।


আরও পড়ুন: China on Covid19: কোভিড মৃত্যু লুকিয়ে রাখছে চিন, রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য


অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে দেশকে বার করে আনতে ঢের আগে থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চলছিল আইএমএফ-এর। কিন্তু সেই সময়ই মুদ্রাস্ফীতি এবং মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশ জুড়ে গণ আন্দোলন শুরু হয়। বিরোধিতার মুখে পড়ে সেই সময়  পেট্রল-ডিজেলের শুল্ক লিটারে যথাক্রমে ১০ এবং ৫ টাকা করে কমিয়ে সম্প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন ইমরান। তাতে অর্থনীতি আরও বেসামাল হয়ে যায় বলে অভিযোগ। ফলে আলোচনাও ভেস্তে যায় মাঝপথে।


দায়িত্ব হাতে পেয়েই সক্রিয় শাহবাজ


গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পরই নতুন করে আলোচনায় বসতে উদ্যোগী হন শাহবাজ। একই সঙ্গে অর্থনীতির হাল ফেরাতে দেশের সরকারি বিভাগগুলিতের কাজকর্মের খোলনলচেও একধাক্কায় পাল্টে দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাঁর সরকার সরকারি দফতরগুলিতে দু’দিনের পরিবর্তে সপ্তাহে এক দিন ছুটির ঘোষণা করে। কাজের সময়সীমাও বাড়িয়ে দিনে ১০ ঘণ্টা করা হয়। পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শাহবাজ নিজেই সকাল ৬টায় দফতরে পৌঁছে যাচ্ছেন। ফলে বাকিদের একরকম বাধ্য হয়েই তাঁর আগে পৌঁছতে হচ্ছে।


এমনকি রমজান চলাকালীনও তেমন কোনও রেহাই মিলছে না। বরং সোম থেকে বৃহস্পতি এবং শনিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত কাজের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। নমাজের জন্য দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সময় পাচ্ছেন সকলে। কাজের সময় বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের বেতনও ১০ শতাংশ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন শাহবাজ। কিন্তু দম ফেলার সময় না পেয়ে তাঁর নীতির উপর চটে রয়েছেন সকলে।