নয়াদিল্লি: আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে ফের ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’-এর চোরাস্রোত। ‘গোয়েন্দা’ তকমা দিয়ে ৬০ জন রুশ কূটনীতিককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। একইসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিয়াটেলের রুশ কনস্যুলেটও। আমেরিকার পাশাপাশি, বহু রুশ কূটনীতিককে নিজ নিজ দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে বা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তত ১৪টি দেশ।
সম্প্রতি, ব্রিটেনে প্রাক্তন রুশ গুপ্তচরকে নার্ভ গ্যাস দিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মস্কোর বিরুদ্ধে। তারপরই, এই সোমবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় ওয়াশিংটন। এদিন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব সারাহ সন্ডার্স জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একসঙ্গে ৬০ রুশ গোয়েন্দা অফিসারকে দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এঁদের অনেকেই রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী সদস্য হিসেবে কাজ করছিলেন।
পাশাপাশি, সিয়াটেলের রুশ কনস্যুলেট বন্ধ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ওই কনস্যুলেট একটি মার্কিন সাবমেরিন ঘাঁটি ও বোয়িংয়ের কারখানার ভীষণই কাছে হওয়ায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানা গিয়েছে, আমেরিকা ছাড়তে ওই কূটনীতিকদের এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। আমেরিকার এই সিদ্ধান্তের পরই ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহু দেশ তাদের দেশ থেকে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করছে। সব মিলিয়ে বহিষ্কৃত হওয়ার সংখ্যাটা প্রায় ১০০ ছুঁয়েছে।
জানা গিয়েছে, আমেরিকার মতোই কানাডা, ইউক্রেন সহ প্রায় ১৫টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশও নিজ নিজ দেশ থেকে রুশ কূটনীতিকদের বেরিয়ে যেতে বলেছেন। জার্মানি, ফ্রান্স ও পোল্যান্ডও জানিয়েছে, তারা প্রত্যেকেই চার রুশ কূটনীতিকদের দেশ থেকে বেরিয়ে যেতে বলবে। ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস দুজন করে এবং ইতালি, ফিনল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়া একজন করে কূটনীতিককে বহিষ্কার করতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে প্রাক্তন রুশ গুপ্তচর ৬৬ বছরের স্ক্রিপাল ও তাঁর ৩৩ বছরের কন্যা ইউলিয়ার ওপর নার্ভ গ্যাসের হামলা হয় ব্রিটেনে। দুজনই সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে ব্রিটেন ইতিমঘধ্যেই সেদেশে নিযুক্ত ২৩ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।
এদিকে, প্রাক্তন গুপ্তচরের ওপর হামলার ঘটনা অস্বীকার করার পাশাপাশি কূটনীতিক বহিষ্কার নিয়ে ক্ষুব্ধ রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, এর যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। মস্কোর সাফাই, কূটনীতিক বিতাড়ন করে অহেতুক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে গুপ্তচর-বিষক্রিয়া কাণ্ডের জেরে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ শুরু হল রাশিয়ার বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।