কলকাতা: প্রাণের উদ্ভব হল কী করে ? এই নিয়ে বিজ্ঞানীদের বেশ কিছু অনুমান রয়েছে, তবে সঠিকভাবে কোনও প্রমাণিত তথ্য় নেই। পৃথিবী সৃষ্টির বহু কোটি বছর পর প্রাণ আবিষ্কার হয়। তার পিছনে ছিল কিছু নির্দিষ্ট রাসায়নিক প্রক্রিয়া। যা না থাকলে নিউক্লিয়াস, কোশ তৈরিই হত না। কিন্তু এগুলি তৈরি হলেও তাতে প্রাণ সঞ্চার হল কী করে ? সম্প্রতি এই নিয়েই আলোর দিশা দিল একটি গবেষণা। সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণায় একটি নতুন যৌগের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে এটিই প্রাণের অন্যতম চাবিকাঠি ছিল।


মেটাবলিজম প্রাণের অন্যতম লক্ষণ


বিজ্ঞানীদের মেটাবলিজম এমন একটি প্রক্রিয়া যা আমাদের শরীরকে সচল রাখে। খাবারকে শক্তিতে পরিনত করা এর কাজ। সেই শক্তি দিয়ে আমরা চলাফেরা করি। অন্য়ান্য দৈহিক কাজও সেই শক্তির দ্বারাই সম্পন্ন হয়। তাই একটি পদার্থকে সজীব বলতে গেলে তার মেটাবলিজম রয়েছে কি না দেখা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, মেটাবলিজমই প্রাণের লক্ষণ। কিন্তু এই মেটাবলিজমের জন্ম কীভাবে ? এর উত্তর খুঁজেছে সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা। 


প্রাণ রহস্যের পিছনে একটি যৌগ


ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অর্গ্যানিক কেমিস্ট্রির অধ্যাপক ম্যাথিউ পোনার সংবাদমাধ্য়ম ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, প্রাণের উদ্ভব কী করে, এই নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই মানুষের কৌতুহল রয়েছে। কিন্তু সেই কৌতুহলের নিবৃত্তি হয়নি আজও। ইউসিএল-এর অধ্যাপক ম্যাথিউয়ের কথায়, সম্প্রতি সেই প্রশ্নের উত্তর কিছুটা হলেও পাওয়া গিয়েছে। মেটাবলিজম চালু রাখে এমন একটি জটিল যৌগের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এটিই প্রাণ সঞ্চার করার পিছনে দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।


সব প্রাণীর ক্ষেত্রেই এক ফর্মুলা ?


এই বিষয়েও সন্দেহের নিরসন করছেন অধ্যাপক। তাঁর কথায়, সারা বিশ্বের প্রাণীর মধ্যে কোটি কোটি বৈচিত্র্য রয়েছে। তবে এত কিছুর পরেও কোশ গঠনের কিছু জিনিস সবার ক্ষেত্রেই এক। এগুলিকে প্রাইমারি মেটাবলাইট বলা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, নিউক্লিওটাইড ইত্যাদি। অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রোটিন নির্মাণে সাহায্য করে। অন্য়দিকে নিউক্লিওটাইড ডিএনএ ও আরএনএ গঠনে সাহায্য করে। নয়া গবেষণায় এমনই এক প্রাইমারি মেটাবলাইটের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাম কোএনজাইম এ। এটি সব প্রাণীর ক্ষেত্রেই এক। দীর্ঘ গবেষণার পর সাফল্যও মিলেছে। যা থেকে প্রাণ রহস্যের কিছুটা সমাধান হল বলেই মনে করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন - Leap Year: লিপ ইয়ার গুনতে কেন ৪, ১০০-এর কারিকুরি করেন জুলিয়াস সিজার ?