কলকাতা: চমকে দিয়েছেন কেরালার আইআইটির বিজ্ঞানীরা। কেরালার পলক্কড় আইআইটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা অভিনব পদ্ধতিতে আবিষ্কার করেছেন মানব মূত্র থেকে শক্তি উৎপাদনের (Urine Bio Fertilizer) এক অসাধারণ উপায়। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি তৈরি করা যাবে মানব মূত্র থেকেই। যে হারে দিনে দিনে শক্তির চাহিদা বাড়ছে, তাতে বিকল্প কোনও শক্তির সন্ধান করা আশু প্রয়োজন। সৌরশক্তির পাশাপাশি এবার মূত্র দিয়েও বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। মূত্রে উপস্থিত রাসায়নিক ব্যবহার করে তৈরি হবে বিদ্যুৎ। জ্বলবে আলো, ঘুরবে পাখাও।


শক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির (Urine Bio Fertilizer) উপর জোর দিয়েছে দেশ। আর সেই ভাবনাকে মাথায় রেখেই আইআইটির টিম ইলেকট্রোকেমিক্যাল রিসোর্স তৈরি করেছে মানব মূত্রের উপর ভিত্তি করে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং জৈব সার উৎপাদনের কাজ করা যাবে এই পদ্ধতিতে একইসঙ্গে। আইআইটি পলক্কড় একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, 'মূত্রের মধ্যে থাকা আয়নের শক্তি, নিহিত ইলেকট্রোকেমিক্যাল বিক্রিয়ার ফলে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। একইসঙ্গে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়ামে সমৃদ্ধ জৈব সার উৎপাদনের কাজও হবে মূত্র থেকেই। মলের সঙ্গে মিশ্রিত না হওয়া মূত্র মূলত দুটি ক্ষেত্রে শক্তি উৎপাদন এবং কৃষিক্ষেত্রে বিপুল কাজে আসবে।


এই কাজে (Urine Bio Fertilizer) ব্যবহৃত হবে একটি ইলেকট্রো-কেমিক্যাল রি-অ্যাক্টর, অ্যামোনিয়া অ্যাবসর্পশন, ডি-কালারাইজেশন, ক্লোরিনেশন চেম্বার, ইলেকট্রিক্যাল ম্যানিফোল্ডস ইত্যাদি। এক্ষেত্রে ERRR নামে একটি রিঅ্যাক্টরে ম্যাগনেশিয়ামকে অ্যানোড এবং কার্বনকে ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহার করা হবে। অ্যাক্রিলিকের তৈরি এই ইলেকট্রিক রি-অ্যাক্টরে এই পদ্ধতিতে প্রতি চক্রে ৫০০ মিলিওয়াট থেকে ৭-১২ ভোল্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতে পারে। এতে এলইডি আলো জ্বালানো যাবে অতি সহজেই। এমনকী এ থেকে ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ১০ গ্রাম জৈব সারও তৈরি করা সম্ভব হবে।


মানব মূত্র (Urine Bio Fertilizer) থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়ে 'পিউরিফিকেশন ও সেপারেশন' শীর্ষক একটি জার্নালও প্রকাশ করা হয়েছে আইআইটির পক্ষ থেকে। এই টিমের নেতৃত্ব দিয়েছেন ড প্রবীণ গঙ্গাধরন। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন সঙ্গীতা ভি, সৃজিত পিএম, রিনু আন্না কোশী প্রমুখ। এই তিনজনেই এই বিশেষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য পেটেন্ট ফাইলও করেছেন ইতিমধ্যেই।


সায়েন্স ফর ইকুইটি এমপাওয়ারমেন্ট ডেভেলপমেন্ট, ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের এই দফতর বিশেষ এই গবেষণার কাজে অর্থসাহায্য করছে।


আরও পড়ুন: Viral Video: পরিবেশপ্রেমী বাঘ, মানুষের ছোড়া প্লাস্টিকের বোতল তুলে পরিষ্কার করল প্রাণীটিই