কলকাতা: নদী সম্বন্ধে একটা কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন যে, নদীতে যদি এগিয়ে যেতে চান এবং ডুবে যাওয়া এড়াতে চান, তাহলে তার স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটবেন না। কিন্তু একটা নদী যদি উল্টো দিকে প্রবাহিত হয়। ভারতীয় সমাজে নদীর বিশাল অবদান রয়েছে। এদেশেও নদী পূজিত হয়। যে নদীর কথা বলছি তাও পূজিত। 


ভারতের অধিকাংশ নদী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকেই প্রবাহিত হয়। এদেশে এমন একটি নদী রয়েছে যা উল্টোদিকে বয়ে চলছে। কিন্তু এটিই ভারতের একমাত্র নদী যেটি উল্টো প্রবাহিত হয়। বিপরীত প্রবাহ মানে যেখানে দেশের অধিকাংশ নদী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়, যেখানে নর্মদা নদী তার স্রোতের বিপরীতে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে আরব সাগরে পতিত হয়।


নদী কেন স্রোতের বিপরীতে বয়ে যায়


আমরা এখানে যে নদীর কথা বলছি সেটি নর্মদা নদী। নর্মদা নদী ভারতের দুটি বড় রাজ্য গুজরাট এবং মধ্যপ্রদেশের প্রধান নদী। নর্মদাকে মধ্যভারতের ‘জীবনরেখা’ বলা হয়। এর উৎপত্তিস্থল মাইখাল পর্বতের অমরকন্টক চূড়ায়। নর্মদা নদীর বিপরীত প্রবাহের ভৌগোলিক কারণ হল রিফ্ট ভ্যালি। আসলে রিফ্ট ভ্যালির ঢাল বিপরীত দিকে রয়েছে। এই কারণেই এই নদীটি পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে আরব সাগরে মিশেছে।


কেন নর্মদা তার স্রোতের বিপরীতে প্রবাহিত হয়?


অনেকে এর পেছনে অনেক ধর্মীয় কারণও বলে থাকেন। যাইহোক, এটি তাদের বিশ্বাসের বিষয়, তাই এটি নিয়ে কথা না বলে, আমরা আপনাকে এর পিছনে বৈজ্ঞানিক কারণ বলি। আসলে, গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশের প্রধান নদী নর্মদা স্রোতের বিপরীতে প্রবাহিত হওয়ার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হল রিফ্ট ভ্যালি। রিফ্ট ভ্যালি মানে নদী যে দিকে প্রবাহিত হয়, তার ঢাল বিপরীত দিকে। এই ঢালের কারণে নর্মদা নদীর প্রবাহ পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে। নর্মদা নদী তার উৎস থেকে ১,৩১২ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে আরব সাগরে খাম্বাত উপসাগরে মিলিত হয়েছে।  


এর পিছনে ধর্মীয় কাহিনী কি?


আপনি যদি এটিকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন তবে আপনি এর পিছনে একটি জনপ্রিয় গল্প পাবেন। যার মতে নর্মদা নদীর স্রোতের বিপরীতে প্রবাহিত হওয়ার পেছনে রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনী। কথিত আছে যে, সোনভদ্রের সঙ্গে নর্মদা নদীর বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল, কিন্তু নর্মদার বন্ধু জোহিলার কারণে দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয় এবং এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নর্মদা সারাজীবন কুমারী থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং স্রোতের বিপরীতে প্রবাহিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।


আরও পড়ুন, ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ইংরেজিতেও অনুবাদ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ! পাণ্ডুলিপি প্রকাশ সোশাল মিডিয়ায়