জয়পুর: লাঠির আঘাতে পালাল কুমির। প্রাণে বাঁচলেন বান্নে সিংহ। স্বামীকে একরকম নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে এনে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন রাজস্থানে অজপাঁড়াগার বাসিন্দা বিমল বাই। তাঁর লাঠির আঘাত খেয়েই বান্নেকে ছেড়ে পালায় কুমির। যদিও ঘটনাটি বিশ্বাস করতে পারেননি পাড়াপ্রতিবেশীদের অনেকেই।


কী ঘটেছিল?
ঘটনাটি গত মঙ্গলবারের। বিকেল তখন ৪টে। গবাদি পশুদের নিয়ে বেরিয়েছিলেন রাজস্থানের বাসিন্দা বান্নে সিংহ। ছাগলগুলির তৃষ্ণা পাওয়ায় তাদের নিয়ে চম্বল নদীতে যান বান্নে। তাঁরও গলা শুকিয়ে এসেছিল। জল খাচ্ছিলেন নদীতে নেমেছিলেন। আচমকাই পিছন থেকে লাফিয়ে পড়ে কুমির। হামলা চালায় বান্নের উপর। কাছেই ছিলেন বান্নের স্ত্রী বিমল বাই। কিছু না ভেবে স্বামীকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। হাতে ছিল বাঁশের লাঠি। সেটি দিয়েই কুুমিরটিকে দুমাদ্দুম মারতে শুরু করেন। ভয় পেয়ে কুমির বান্নেকে ছেড়ে দিলেও ফেরত আসে। নদীর দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এবার সরাসরি কুমিরের চোখে আঘাত হানেন বিমল। এর পর আর কোনও আগ্রাসন দেখায়নি কুমিরটি। ফিরে যায় জলে। স্বামীকে টেনে হিঁচড়ে তোলেন বিমল। যদিও ততক্ষণে পায়ে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে তাঁর। তবে কোনও প্রাণের আশঙ্কা নেই তাঁর। 


কী পরিস্থিতি?
আপাতত বান্নে সিংহ চিকিৎসাধীন। সেই অবস্থাতেই সাংবাদিকদের বান্নে বলেছেন, 'কুমিরটা আমার পায়ে কামড় বসিয়েছিল। নদীর জলের দিকে টানছিল। ওর চোয়াল থেকে পা ছাড়িয়ে আনতে বাঁচতে শরীরের সবটুকু শক্তি ব্যবহার করেছিলাম।' তিনি আরও জানান, বিপদের মুখে যে ভাবে স্রেফ একটি বাঁশের লাঠি নিয়ে তাঁর স্ত্রী কুমিরটির উপর চড়াও হয়েছিলেন তা দেখে আশপাশের কয়েকজনও এগিয়ে আসেন। 'সব দেখে ভয় পেয়েছিল প্রাণীটি। পালায় সে।' ঘটনার খবর ছড়াতেই চারদিকে আতঙ্ক ও বিস্ময়ের যুগপৎ আবহ। চম্বলের তীরে এই ভাবে কুমিরের হামলা আতঙ্কিত করেছে অনেককেই। আবার ওই পরিস্থিতিতে যে ভাবে সাহস দেখিয়ে বিমল এগিয়ে আসেন, তাতেও আপ্লুত পাড়া প্রতিবেশিরা। প্রসঙ্গত, গত মাসেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার দিগম্বরপুরে পঞ্চমেরবাজার এলাকায় বাসুদেব ঘড়ার পুকুরে একটি কুমির ভেসে থাকতে দেখেন এলাকারই কেউ কেউ। বিষয়টি চাউর হতে সময় লাগেনি। পাল্লা দিয়ে ছড়ায় আতঙ্কও। যার পর থেকেই পুকুরপাড়ে কাতারে কাতারে মানুষের ভিড় জমা হয়। শেষমেশ বন দফতরের রামগঙ্গা রেঞ্জে খবর পাঠানো হয়। বনকর্মীরা এসে জাল দিয়ে কুমিরটিকে বন্দি করেন। বনকর্মীদের ধারণা, পাশের জগদ্দল নদী থেকে কুমিরটি পুকুরে ঢুকেছিল। কিন্তু এভাবে মানুষের ব্যবহার্য পুকুরে তার ঢুকে পড়ায় আতঙ্কের আবহ সর্বত্র। ভবিষ্যতে যে এরকম আর কখনও ঘটবে না, সে বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা রয়েছে কি? প্রশ্ন করেন স্থানীয়রাই।  


আরও পড়ুন:দক্ষিণ দিনাজপুরে দণ্ডিকাণ্ডে অবশেষে ২ তৃণমূল নেতা গ্রেফতার