Gita Quote :মৃত্যুশোক অমূলক ! প্রিয়জন বিয়োগের কষ্ট ভুলতে গীতায় কী পরামর্শ শ্রীকৃষ্ণের?

Sri Krishna On Soul : আত্মাকে অস্ত্রের দ্বারা কাটা যায় না, আগুনে পোড়ানো যায় না, জলে ভেজানো যায় না, অথবা  হাওয়াতে শুকানো যায় না। 

Continues below advertisement

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের আগে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত তৃতীয় পাণ্ডব ( Arjun ) । ধনুক ধরতে হবে নিজের পিতামহ, অস্ত্রগুরু, ভাইদের বিরুদ্ধে ? দ্বিধাগ্রস্ত তাঁর মন। সেই সময় তাঁকে মার্গদর্শন করাচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ ( Sri Krishna ) । সাংখ্য যোগে তারই বর্ণনা। ভগবান বলেছেন, আত্মা নিত্য এবং অবিনাশী। আত্মার মৃত্যু নেই , জন্ম নেই। শুধু এক দেহ থেকে আরেক দেহে যায় আত্মা। গীতায় শ্রীকৃষ্ণের পরামর্শ, মৃত্যুর জন্য শোক করা সাজে না। দুঃখ, তাপে, আনন্দে স্থিতধী হতে হবে। অচঞ্চল থাকতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন জাগতেই পারে, আত্মা যে এক শরীর থেকে সম্পর্ক ত্যাগ করে অন্য শরীরে প্রবেশ করে, তাতে সে অত্যন্ত কষ্ট পায় , তাহলে তার জন্য শোক অনুভব হওয়া অবাঞ্ছিত কেন ? 

Continues below advertisement

এই সংশয় দূর করতে শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, 

বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় নবানি গৃহ্ণাতি নরোহ পরাণি।

তথা শরীরাণি বিহায় জীর্ণান্যন্যানি সংযাতি নবানি দেহী৷৷ ২২ 

এই শ্লোকের অর্থ, মানুষ যেমন জীর্ণ বস্ত্র পরিত্যাগ করে নতুন বস্ত্র পরিধান করে, দেহীও তেমনই জীর্ণ শরীর ত্যাগ করে নতুন দেহ ধারণ করেন। 

এখানেই প্রশ্ন, মানুষ জন্য পুরনো বস্ত্র ছেড়ে নতুন বস্ত্র পরে, তখন তো সে আনন্দ পায়। কিন্তু আত্মা যখন জীর্ণ দেহ ত্যাগ করে নতুন শরীরে প্রবেশ করে তখন সে দুঃখ পায়। কেন ? তাই এক্ষেত্রে দুঃখ তো আসবেই । ভগবানের ব্যাখ্যা, এখানে আয়ু শেষের নামই হল জীর্ণাবস্থা। সেই অবস্থায় আত্মা দেহ ছেড়ে যায়। শ্রীমদভগবদ্ গীতা, (তত্ত্ববিবেচনী) অনুসারে এর অর্থ মা তাঁর সন্তানের পুরানো নোংরা জামা বদলে দেন। বাচ্চাটি তখন কাঁদতে থাকে , বায়না করে।  কিন্তু মা তা গ্রাহ্য করেন না। কিন্তু মা তো ভালোর জন্যই জামা বদলে দেন। তেমনই ভগবানও জীবের ভালোর জন্যই কান্না গ্রাহ্য না করে তার দেহ পরিবর্তন করে দেন। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক শরীরের নির্দিষ্ট আয়ু রয়েছে।  সেই আয়ু শেষের নামই হল জীর্ণাবস্থা।  তারপরই তা পরিবর্তনের সময় চলে আসে।   

তাই শ্রীকৃষ্ণ তাঁর সখা অর্জুনকে বলেছেন, পোশাকের মতো আমাদের দেহের বিনাশ হলেও আত্মার কখনও বিনাশ হয় না । তাই অর্জুন তুমি বৃথাই শোক করো । প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তি কিন্তু কারও জন্য শোক করে না । পরবর্তী শ্লোকেও রয়েছে এই সম্পর্কিত আলোচনাই। 

নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি নৈনং দহতি পাবকঃ । 
ন চৈনং ক্লেদয়ন্ত্যাপো ন শোষয়তি মারুতঃ।।২৩।।

যার অর্থ আত্মাকে অস্ত্রের দ্বারা কাটা যায় না, আগুনে পোড়ানো যায় না, জলে ভেজানো যায় না, অথবা  হাওয়াতে শুকানো যায় না। 

 

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola