কলকাতা: জন্মাষ্টমী তিথিতে Krishna Janmashtami) জন্মগ্রহণ করেছিলেন লোকনাথ ব্রহ্মচারী। বলা হয় তিনি শিবেরই অবতার। জন্মাষ্টমী তিথিতেই কৃষ্ণের পাশাপাশি পূজিত হন লোকনাথ বাবাও (Lokenath Baba) । তাঁর মাহাত্ম নিয়ে লোকমুখে বহু কথা প্রচলিত রয়েছে।
জন্ম বৃত্তান্ত: ১৭৩০ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ অগাস্ট (২৫ শ্রাবণ, ১১৩৭ বঙ্গাব্দ) বর্তমানের উত্তর ২৪ পরগনার কচুয়া গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। যদিও তাঁর জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ নিয়ে মামলাও হয়েছে। নিত্যগোপাল সাহা নামে এক ব্যক্তি এ বিষয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন ও রায় অনুযায়ী তার জন্মস্থান কচুয়া বলে চিহ্নিত হয়। (Lokenath Baba History)
লোকনাথ এবং ইতিহাস: লোকনাথ ব্রহ্মচারী পিতার নাম রামনারায়ণ ঘোষাল। মা কমলা দেবী। তাঁদের চতুর্থ সন্তান ছিলেন লোকনাথ। উপনয়ন এবং তারপর লোকনাথের গুরুভার নিয়েছিলেন রামনারায়ণ, আচার্য গাঙ্গুলী (ভগবান চন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়)। লোকনাথ আচার্য গাঙ্গুলীর শিষ্যত্ব লাভ করেন। একই সঙ্গে তাঁর প্রিয় বন্ধু বেণীমাধব চক্রবর্তীও ভগবান গাঙ্গুলীর শিষ্যত্ব লাভ করেন। এ সময়ে তাঁদের বয়স ছিল ১১ বছর। এর পর আচার্যের সঙ্গে দুজন ব্রহ্মচারী হয়ে গৃহ ত্যাগ করেন।
গৃহ ত্যাগের পর ১১৪৮ সালে আচার্য গাঙ্গুলী তাঁদের নিয়ে আসেন কালীঘাটের শক্তিপীঠে। একান্ন পিঠের অন্যতম মহাপীঠ কালীঘাট। কালীঘাটে আসার পর বাল্য ব্রহ্মচারী দুজন আচার্যকে সাধন-ভজন শিক্ষা দেওয়ার অনুরোধ করেন। সাধন-ভজনের জন্য নির্জন স্থানের উদ্দেশে তাঁরা কালীঘাট ত্যাগ করেন। নির্জন স্থানে এসে শিষ্য দুজন কঠোর সংযম পালন করেন এবং দীর্ঘ ৩০-৪০ বছর একাধিক ব্রত পালন করে করেন। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে কঠিন তপস্যায় লোকনাথ পরমতত্ত্ব লাভ করেন।
পুজোর নির্ঘণ্ট: জন্মাষ্টমী তিথি শুরু হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৮টা ১২ মিনিটে। আজ অর্থাৎ ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যে ৮টা বেজে ৫ মিনিটে ছাড়বে তিথি। রোহিণী নক্ষত্র থাকছে ৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টো ৫১ মিনিট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর september দুপুর ৩টে ১৯ মিনিটে। তাই যাঁরা পুজো করতে চান এই সময়ের মধ্যেই পুজো সেরা ফেলুন।
লোকনাথ পুজোর নিয়মকানুন: শুদ্ধাচারে পুজোয় বসুন। লোকনাথ শিবের অবতার। যাকে বলা হয় হরিহর আত্মা। তাই লোকনাথ বহ্মচারীর পুজো শুরুর আগে মহাদেবের পুজোর নিদান দেন বিশেষজ্ঞরা। জন্মাষ্টমীতেও প্রথমে মহাদেবের অভিষেক করে নীলকন্ঠ সহযোগে তাঁর পুজো করুন। এরপর সাদা, বা নীল ফুল অর্পন করুন লোকনাথকেও, তাঁকে নীল সাপলা দিতেও পুজো করতে পারেন। জানা যায়, লোকনাথ ব্রহ্মচারীর প্রিয় খাবার মাখন এবং মিছরি। শুধু মাখন মিছরিতেই সন্তুষ্ট হন তিনি। বলা হয় সাদা মিষ্টিও ভীষণ পছন্দ তাঁর। ফ্যান ভাত, মাখন, আলুসেদ্ধও বাবার ভীষণ পছন্দের খাবার বলে মনে করেন অনেকে। ভোগের থালায় রাখতে পারেন তালশাঁস, তাল মিছরিও। পুজোর পর অবশ্যই নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দুস্থ মানুষকে কিছু দান করুন। বলা হয় জীব সেবা ছাড়া যে কোনও পুজোই অসম্পূর্ণ থাকে।
লোকনাথ পুজোর মূলমন্ত্র
জয় বাবা লোকনাথ
জয় ব্রহ্ম লোকনাথ
জয় শিব লোকনাথ
জয় গুরু লোকনাথ
পুজোর সময়ে এই মন্ত্র অবশ্যই বলুন।
আরও পড়ুন: Janmashtami 2023 : শ্রীকৃষ্ণের মাথায় কেন সর্বদা শোভা পায় ময়ূরের পালক?